এডিস মশা নিধনে খাল এবং জলাশয়ে থাকা কচুরিপানা এবং ভাসমান ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতে জার্মানি থেকে অত্যাধুনিক মেশিন আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে অনলাইনে আয়োজিত এডিস মশা নিধন এবং ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ দেশের সব সিটি কর্পোরেশনের খাল ও জলাশয় থেকে কচুরিপানা এবং অন্যান্য ভাসমান পদার্থ পরিষ্কার করে মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস ও পানির প্রবাহ ঠিক রাখার লক্ষ্যে এই মেশিন আমদানি করা হচ্ছে। চীন, জাপান, কোরিয়া এবং ব্রিটেনসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এই মেশিনগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে। সবগুলো দেশের মেশিন যাচাই-বাছাই করে জার্মানি থেকে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই মেশিন কচুরিপানাসহ ভাসমান পদার্থ এমনকি পানির এক মিটার নিচের ময়লা-আবর্জনাও অপসারণ করতে সক্ষম।
চলমান সময়কে এডিস মশা প্রজননের উর্বর সময় উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এডিস মশা স্বচ্ছ পানিতে জন্মে থাকে তাই বাসাবাড়িতে কোথাও পানি জমিয়ে রাখা যাবে না । নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। এ ব্যাপারে অনেক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। এরপরেও এডিস মশার প্রজননে দায়ী চিহ্নিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি জানান, এডিস মশা নিধনে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ওষুধ বিশেষ করে এডাল্টিসাইড ও লার্ভিসাইডের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। এছাড়া, পর্যাপ্ত ফগিং মেশিন, প্রশিক্ষিত জনবলও প্রস্তুত আছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে অভিযান চালাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সিটি কর্পোরেশনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। নগরবাসীকে মশার উপদ্রব থেকে বাঁচাতে সব ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ সচেতন না হলে এবং খাল-জলাশয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করতে পারলে মশার প্রজনন বৃদ্ধি ঠেকানো সম্ভব হবে না। জনমানুষের অংশগ্রহণ অর্থাৎ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে যেকোনো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করা সম্ভব।
মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয় এবং সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাদের আওতাধীন অফিস এবং অন্যান্য অবকাঠামোতে যেন এডিস মশার লার্ভা না জন্মের সেদিকে নজর রাখতে হবে এবং নির্দেশনা দিতে হবে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, সিটি কর্পোরেশন একটি আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এই আইন লঙ্ঘিত হলে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। দেশ ও মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী কিছু করলে যে কারও বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার সিটি কর্পোরেশনের আছে। এডিস মশা নিধন এবং ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কেউ না মানলে যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও বলেন মন্ত্রী।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, খুলনা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক এবং ওয়াসার এমডি।
নদী বন্দর / সিকে