নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা শতাধিক অনুসারী নিয়ে মিছিল করেছেন। এসময় তাকে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
রোববার (৩০ মে) সকাল সাড়ে ৮টায় মেয়র কাদের মির্জার নেতৃত্বে মিছিলটি বসুরহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু চত্বরে প্রতিবাদ সভা করে।
বক্তব্যে কোম্পানীগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শামিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর, সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সুপ্রভাত চাকমা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনির প্রত্যাহার দাবি করেন বসুরহাট মেয়র। এজন্য তিনি সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে ২৪ ঘণ্টার সময়ও বেঁধে দেন। অন্যথায় পৌরসভা চত্বরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করার হুমকি দেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘এখানে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ওরা (প্রতিপক্ষ) তাণ্ডব চালাচ্ছে। ডিসি-এসপির নির্দেশে টাকার জন্য প্রশাসন তাদেরকে সমর্থন দিচ্ছে। ওরা (প্রতিপক্ষরা) এখানে একরামের (নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি) রাজত্ব কায়েম করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) রাতে আমার অন্তত ১৫ জনকে গুলি করা হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন ঢাকা মেডিকেলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। কিন্তু প্রশাসন একজন আসামিকেও গ্রেফতার করেনি। শুনেছি দুজনকে আটক করে ছেড়ে দিয়েছে।’
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার সঙ্গে আছেন। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আমার দূরত্ব থাকলেও এখন নাই। তবুও প্রশাসন আমার কথা শুনছে না। তারা আমার ছেলেদের ধরে এনে মারধর করলেও তাদের (আওয়ামী লীগের) কাউকে ধরে মারধর করেনি।’
এসময় তিনি মাইকে স্লোগান ধরেন, ‘ওসি রইন্যার (ওসি মীর জাহেদুল হক রনি) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘শামিমের (এএসপি শামিম কবির) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ইউএনওর চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ডিসির চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘এসপির চামড়া তুলে নেব আমরা’।
কাদের মির্জা তার অনুসারীদের নিজ নিজ এলাকায় সংগঠিত হয়ে মিছিল সমাবেশ করার নির্দেশ দেন। এতে কেউ বাধা দিলে তা প্রতিহত করারও নির্দেশ দেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সহিংসতায় আবারো উত্তেজনা বিরাজ করছে নোয়াখালীর বসুরহাটে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নিজ এলাকা কোম্পানীগঞ্জে গত পাঁচমাস তার অনুসারী দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয় অধিবাসীরা এ থেকে দ্রুত পরিত্রাণ চেয়েছেন।
ইতোমধ্যে সহিংসতায় স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। অর্ধশতাধিক মামলায় গ্রেফতারও হয়েছে শতাধিক নেতাকর্মী। সর্বশেষ শনিবার (২৯ মে) রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় কাদের মির্জার ৯ অনুসারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বসুরহাটে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
নদী বন্দর / এমকে