মাছির যন্ত্রণায় খামারের গবাদি পশু অতিষ্ট থাকে। শুধু তাই নয় মাছি খামারে রোগ জীবাণুও ছড়ায়। তাই গবাদি পশুর খামারকে মাছিমুক্ত খুবই জরুরি।
এ ছাড়া গরু, ছাগলের শরীরে বিভিন্ন ক্ষতিকর ভাইরাস ছড়িয়ে পশুগুলোকে সহজেই রোগাক্রান্ত করে দিতে পারে। তাই জেনে নিন খামারকে মাছিমুক্ত রাখার সহজ উপায়।
খামারের পোষা প্রাণির মল-মূত্র নিয়মতি ও দ্রুত সেসব পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কার করতে দেরি হলেই মাছি এসে উপস্থিত হয়। সেই সাথে বংশবিস্তার করে। কারণ, পোষা প্রাণির মল মাছিদের ডিম পাড়ার উপযুক্ত জায়গা। একবারে ৭৫–১৫০টি ডিম পাড়ে এরা। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোতে সময় লাগে মাত্র ২৪ ঘণ্টা।
মাছি তাড়ানোর জন্য খামারের আশেপাশে কিছু গাছ লাগান। খুব পরিচিত কিছু গাছ লাগালেই হবে। যেমন পুদিনা, লেমনগ্রাস ও তুলসি। টবে লাগাতে পারেন এই গুল্মগুলো। টবগুলো সাজিয়ে রাখতে হবে সামনের ও পেছনের দরজার আশপাশে। জানালার পাশেও রাখতে পারেন।
লেবু টুকরো টুকরো করে ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লেবুর মধ্যে লবঙ্গের পুরোটা ঢুকাবেন শুধুমাত্র লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে খামারের কোণায় রেখে দিন। এই পদ্ধতিতে মশা-মাছি, পোকামাকড় একেবারেই দূর হয়ে যাবে।
ব্যবহৃত চা-পাতা ফেলে না দিয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। এইভাবে ওই চা পাতা ধুনোর বদলে ব্যবহার করুন। শুকনো চা পাতা পোড়ানো ধোঁয়ায় সমস্ত মশা, মাছি পালিয়ে যাবে।
গরুর গায়ে স্প্রে করার জন্য ২ মিলি তারপিন তেল (অয়েল তারপিন, স্পিরিট তারপিন বা থিনার না), ২ গ্রাম কর্পুর (ন্যাপথালিন গুঁড়াও অনেকে দেন) এ দুইটা জিনিস ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে গরুর গায়ে স্প্রে করলে মাছি বসবে না।
মশা-মাছি কর্পুরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। একটি ৫০ গ্রামের কর্পুরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি খামারের কোনায় রেখে দিন।
তাৎক্ষণিকভাবেই মশা- মাছি গায়েব হয়ে যাবে। দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। আগের পানিটুকু ফেলে না দিয়ে ফার্মে ছিটিয়ে দিলে পোকামাকড় ও পিঁপড়ের যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পাবেন।
রসুন বেটে পানিতে মিশিয়ে তরল করে পুরো খামারে স্প্রে করতে পারেন। এটা মশা তাড়াতে খুবই কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায়। খামারের মাছি তাড়াতে এর যেকোনো একটি উপায় প্রয়োগ করুন। মাছি তাড়াতে না পারলে আপনার স্বপ্নের খামার থেকে প্রত্যাশিত আয় করতে পারবেন না।
নদী বন্দর / এমকে