নেত্রকোনার এক মেধাবী শিক্ষার্থী দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে আজ দৃষ্টিহীন। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেছেন তার পরিবার।
নেত্রকোনা জেলা শহরের দক্ষিণ নাগড়া এলাকা নিবাসী শিকড় উন্নয়ন কর্মসূচী’র সভাপতি আ ফ ম রফিকুল ইসলাম খান আপেল জানান, তার ছেলে কামরুল ইসলাম খান হৃদয় ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও ছিল বেশ পরদর্শী। ২০১০ সালে ঢাকা উত্তর (নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, শেরপুর, জামালপুর ও নরসিংদী) অনুর্ধ্ব ১৬ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে নেত্রকোনা জেলার হয়ে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে উদ্বোধনী ব্যাটস্ম্যান হিসেবে খেলে নেত্রকোনা জেলা দলকে চ্যাম্পিয়ন হতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তার সহকর্মীরা আজ জাতীয় দলের হয়ে খেললেও সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলায় খেলাধুলা করতে পারছে না। তিনি আরো জানান, তার ছেলে হৃদয় পড়াশুনায় অত্যন্ত মেধাবী। সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে অধ্যায়নকালীন সময়ে তার দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। দেশের নামকরা সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল তার চিকিৎসা নিলেও এখানকার ডাক্তাররা তার সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারেনি। পরবর্তীতে নামী ধামী চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের শংকর নেত্রালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে একাধিকবার চিকিৎসা নিলেও তার অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। সেখানকার ডাক্তাররা জানান, সে রেটিনাইটিস পিগম্যাটোসা (আর পি) রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগের সঠিক চিকিৎসা পৃথিবীতে আজও আবিস্কৃত হয়নি। তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার কোন সম্ভাবনা না থাকায় পরিবার তাকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
হৃদয় আনন্দ মোহন কলেজ থেকে বিবিএ চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উর্ত্তীণ হন। পরবর্তীতে সে এমবিএ ভর্তি হয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি স্বাপেক্ষে শ্রুতলিপির সাহায্যে চূড়ান্ত পরীক্ষায় আটটি বিষয়ে পরীক্ষা অংশ গ্রহন করে। দেশে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস দেখা দেয়ায় সরকার সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করায় তার বাকী দুটি পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে হৃদয়ের সাথে কথা বললে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দেশের বড় বড় কয়েকটি জেলায় দৃষ্টিহীনদের জন্য সরকারী বেসরকারী পর্যায়ে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করার সুযোগ থাকলেও নেত্রকোনায় সে রকম কোন ব্যবস্থা না থাকায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা লেখাপড়া ও কোটা ভিত্তিক চাকুরী বা নিজে স্বাবলম্বী হতে পারছেন না।
ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে থেকে যাচ্ছে। তার পরিবার এ ব্যাপারে মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত দৃষ্টিহীনদের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
নদী বন্দর / এমকে