ময়মনসিংহের গফরগাঁয়ের চর আলগী ইউনিয়নে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভেঙে পড়েছে তিনটি সেতু। এ ঘটনার দায় নিতে চাইছেন না কেউ। এদিকে দুর্ভোগে পড়েছেন ১৫ হাজার মানুষ।
গফরগাঁও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পুর্ব টেকির চরের খালের ওপর ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি ৫৪ লাখ ৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৬-১৭ অর্থবছরে, চর আলগী বোরাখালী খালের উপর ৪০ ফুট দৈর্ঘের সেতুটি ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৭-১৮ অর্থবছরে ও চর মছলন্দ গ্রামের খালে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি ৪৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৩-১৪ অর্থবছরে নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় হঠাৎ ভেঙে পড়ে বোরাখালী খালের সেতুটি। এর আগে ২৫ মে ও ২৬ মে বাকি দু’টি সেতুও ভেঙে পড়ে।
এদিকে তিনটি সেতু ভেঙে পড়ায় বোরাখালী, নয়াপাড়া, কুরতলীপাড়া, জিরাতিপাড়া, টেকিরচর, নিধিয়ারচর, হোসেনপুর উপজেলার বগা মারার চর, হাজিপুর, চরকাটাইল, মহেশকুড়াসহ আশপাশের ১০-১২টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
পূর্ব টেকিরচর গ্রামের হালিম উদ্দিন বলেন, পাউবোর অপরিকল্পিত খননের কারণেই সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে। গফরগাঁও ও হোসেনপুরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দু’পারের হাজার হাজার মানুষ।
বোরাখালী গ্রামের আবুল বাসার বলেন, সেতু তিনটি পাইলিং না করেই নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে। এতে সরকারের প্রায় দেড় কোটি টাকা খালের পানিতে ভেসে গেল। এর সঠিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
চর আলগি ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিনটি সেতু তৈরি করা হয়েছিল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ভেঙে পড়া সেতুগুলো পরিদর্শন করেছেন। আমাদের ধারণা, পাউবোর অপরিকল্পিত খননের কারণেই সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে।
গফরগাঁও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, সেতুগুলো নির্মাণের আগে বোরাখালী খালটি মরা ছিল, তেমন পানি ছিল না এতে। এ খালের ওপর সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু পাউবো ওই খালের দুই পাশে ৮-১২ ফুট করে খনন করার কারণে পানির চাপে সেতুগুলো ধসে পড়ে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেতু তিনটি পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নদী বন্দর / পিকে