পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলে দিন দিন সূর্যমুখীর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে শ্রমিক সংকট এবং শ্রমিকদের মজুরী বেশি হওয়ায় এর উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায়। এমন পরিস্থিতিতে সূর্যমুখী চাষে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। এতে করে সূর্যমুখী চাষে কৃষকের আগ্রহ যেমন বৃদ্ধি পাবে এর পাশাপাশি দেশে তেল উৎপাদনের পরিমাণও বাড়বে।
পটুয়াখালীতে এ বছর ৪৯৬ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। কিছু কিছু জমিতে সূর্যমুখীর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে জমি প্রস্তুত, বীজ বপনসহ ফসল তোলার পর তা মাড়াই করতে আধুনিক মেশিনের ব্যবহার করা হয়েছে। এসব মেশিনের ব্যবহারের ফলে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
পটুয়াখালী বদরপুর এলাকার প্রান্তিক কৃষক জালাল আহম্মেদ জানান, সূর্যমুখী ফলন ভালো হলেও সূর্যমুখীর মোচা থেকে বীজগুলো ছাড়ানো অনেকটা কষ্টসাধ্য এবং সময় সাপেক্ষ ছিল। এ কারণে অনেকে সূর্যমুখী চাষ করতে চায় না।
হাতে সূর্যমুখী ফুল থেকে বীজ ছাড়াতে হলে ফুলের পেছনের সাইডে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে হয়। তবে আধুনকি মেশিন ব্যবহার করলে এক দিনের মধ্যেই সহজে এই কাজ করা যায় এবং শ্রমও কম। আগে যে কাজ করতে ছয় থেকে সাত দিন সময় লাগতো তা এখন এক দিনেই করা যাচ্ছে।’
পটুয়াখালী আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনিস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কৃষককে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। সূর্যমুখী যখন চাষ করা হয়েছে সে সময়ে বীজ বপন যন্ত্র দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।
এখন তাদের ফসল সংগ্রহের পর তা মাড়াই করতে মেশিন সরবরাহ করেছি। কৃষক যতটা প্রযুক্তি নির্ভর হবে তার চাষাবাদেও সে ততটা লাভবান হবেন। এ ছাড়া এসব মেশিনের বাজারমূল্য খুব বেশি না হওয়ায় কমিউনিটি ভিত্তিতে কৃষকরা চার-পাঁচজন মিলে সহজেই দুয়েকটি মেশিন ক্রয় করে নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে পারবেন। ’
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণে কৃষি সেক্টরকে সবচেয়ে বেশি প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখী হতে হচ্ছে। এ কারণে একই ফসল বার বার চাষ না করে কৃষকদের বিভিন্ন জাতের ফসল চাষাবাদে আগ্রহী করার কথাও বলছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। তবে কৃষি সেক্টরের উন্নয়নে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে বিশেষ প্রণোদনার পাশপাশি এলাকা ভিত্তিক বিনা মূল্যে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করার দাবি জেলার প্রান্তিক কৃষকদের।
নদী বন্দর / বিএফ