যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলিনের পথে রয়েছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পাঁচটি ইউনিয়নের ১৩টি গ্রাম। এসব গ্রামের শত শত বাড়িঘর ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন নদী পাড়ের মানুষরা।
জানা যায়, এরমধ্যেই উপজেলার জালালপুর, খুকনি, কৈজুরি, সোনাতনী ও গালা ইউনিয়নের ১৩টি গ্রামের ১৫টি বাড়িঘর, ৩০ বিঘা ফসলি জমি ও অর্ধশত গাছপালা যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি রয়েছে বিলীন হওয়ার পথে।
গত কয়েক দিন ধরে যমুনা, করতোয়া, বড়াল ও হুরাসাগর নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এতে খুকনি ইউনিয়নের আরকান্দি, জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, ঘাটাবাড়ি ও পাকুরতলা, কৈজুরি ইউনিয়নের হাটপাচিল, সোনাতনী ইউনিয়নের পশ্চিম বানতিয়ার, ছোট চানতারা, বড় চানতারা, ধীতপুর, দইকান্দি ও বানিয়া সিঙ্গুলী, গালা ইউনিয়নের আগবাঙ্গলা ও ধলাই গ্রাম বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে জালালপুর গ্রামের দুলাল শেখ, তয়জাল মোল্লা, দেরাজ মোল্লা, আব্দুল হামিদ, আরকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই এসব গ্রাম ও ঘরবাড়ি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। মানুষজন নিঃস্ব হয়ে যাবে।
জালালপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মহির উদ্দিন বলেন, ‘এলাকার সব বাড়িঘর ভেঙে শেষ হয়ে যাচ্ছে। মানুষজন ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নিলে এসব গ্রাম শেষ হয়ে যাবে’।
খুকনি ইউপি চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁদ, জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ, সোনাতনী ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ও গালা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) বারবার বলা সত্ত্বেও সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়ায় এ বছরও বর্ষা মৌসুম শুরু না হতেই এসব গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। বাড়িঘর রক্ষায় এলাকাবাসী দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাই অবিলম্বে ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি’।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘অচিরেই ভাঙন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে সিরাজগঞ্জ পাউবোকে দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ ও তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আর এ সমস্যা থাকবে না। একনেকে প্রকল্পটি পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে’।
নদী বন্দর / এমকে