লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে জনদুর্ভোগ লাঘবে তিস্তার শাখা নদীর ওপরে একটি ব্রিজ নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার। কিন্তু ব্রিজের একপাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় ২২ বছরেও দুই গ্রামের মানুষের ভোগান্তির অবসান হয়নি। রাস্তার অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল-কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের চর বৈরাতী এলাকার একটি ব্রিজের পূর্বের অংশের নিচ থেকে সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ৬ বছর আগে ব্রিজটি তিস্তার বন্যায় ভেঙে গেলেও আজও একই অবস্থায় পড়ে আছে। কেউ এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দুই গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবার।
জানা গেছে, এলজিইডির আওতায় ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের চর বৈরাতী এলাকায় তিস্তার শাখা নদীর ওপরে ২ লাখ ৯১ হাজার ১৬০ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ছয় বছর আগে তিস্তা নদীর পানির চাপে ব্রিজটির একপাশের সংযোগ সড়কের কিছু অংশ ভেঙে যায়।
ভেঙে যাওয়া সড়ক মেরামতের জন্য জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে এলাকার অনেকেই একাধিকবার আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। বর্ষাকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ একটি সংযোগ সড়কের অভাবে বছরের পর বছর মারাত্মক দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন। যোগাযোগের সমস্যা থাকায় বর্তমানে ওই দুই গ্রামের মানুষ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজ থাকলেও রাস্তা না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে তিন-চার কিলোমিটার পথ উল্টো ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। ব্রিজের একপাশে রাস্তা না থাকার কারণে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পাশাপাশি অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষের চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে। তারা আক্ষেপ করে বলেন, এবারও বর্ষা চলে আসল কিন্তু ব্রিজ ঠিক হলো না।
চরের মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য প্রতিদিন হাট-বাজারে যেতে হয়। ফলে ব্রিজের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় দুর্দশার মধ্য দিয়ে মানুষের চলাচল করতে হচ্ছে।
চর বৈরাতী এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আইয়ুব আলী (৬০) নামে এক বৃদ্ধ জানান, ‘হামার এলাকাত চেয়ারম্যান মেম্বাররা খালি আসি আসি ভোট নিয়া যায়। ভোট নেয়ার আগত কত কথা কয় কিন্তু ভোট শ্যাষ হইলে আর ফিরিয়াও দেখে না।’
দক্ষিণ ঘনেষ্যাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘এই সংযোগ সড়কটি মেরামত করতে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা এগিয়ে আসেননি। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে ছেলেমেয়েরা খুব কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যায়। সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে এবং ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়কটি সংস্কার করার জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জে উপজেলা প্রকৌশলী এ টি এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে অচিরেই সেতুটি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নদী বন্দর / জিকে