টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভেঙেপড়া জনগুরুত্বপূর্ণ পেকুয়া-অভিরামপুর সড়কের বংশীনগর এলাকার ইনথখাচালা নামকস্থানের ব্রিজটি এক বছরেও সংস্কার করা হয়নি। গত বছরের ২১ জুন ব্রিজটি ভেঙে বালিভর্তি মাহিন্দ্রসহ খাদে পড়ে। এতে ওই সড়কে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জনসাধারণের চলাচলের জন্য বাঁশতৈল ইউপি চেয়ারম্যান মাটি ভরাট করে সরু রাস্তা তৈরি করে দিলেও তা দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় ওই এলাকায় উৎপাদিত ফসল চাষীরা হাটবাজারে নিতে পারছেন না। এছাড়াও ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মির্জাপুর, সখিপুর ও কালিয়াকৈর উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানান, ব্রিজটি দিয়ে মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের অভিরামপুর, কটামারা, ইনথখাচালা, বংশীনগর, দিঘীবাড়ি, মুথারচালা ও বালিয়াজানসহ সখিপুর উপজেলার রাজাবাড়ি, দেওয়ানপাড়া, বাজাইল ও কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া, মুনচালা ও পাগুড়াচালা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে।
তারা জানান, শতাধিক সিএনজি চালিত অটোরিকশা, বিদ্যুৎচালিত অটোরিকশা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলাচল করে থাকে। মৌসুমী ফল আম, কাঁঠাল ও লিচু পরিবহনে ভারি যান চলাচল করে। এছাড়া এলাকায় উৎপাদিত ধান ও সবজি পরিবহনে নিয়মিত পিকআপ ও ছোট ট্রাক চরাচল করত। বালিভর্তি একটি মাহিন্দ্র ব্রিজটি পার হওয়ার সময় ভেঙে পড়ে। সেই থেকে ওই আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
অবশ্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান মিল্টন জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে ওই স্থানে মাটি ফেলে সরু রাস্তা তৈরি করে দিয়েছেন। এতে ওই সড়ক দিয়ে এলাকাবাসী পায়ে হেঁটে ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে পারলেও মাঝারি ও ভারি যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে ওই এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী হাট বাজারে আনা-নেয়া করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
অভিরামপুর গ্রামের কৃষক বারেক শিকদার, আব্দুর রউফ, জাকির হোসেন ও খায়রুল ইসলাম জানান, বাঁশতৈল ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের লোকজনের চলাচলে একমাত্র পাকা রাস্তা এটি। রাস্তাটির ইনথখাচালা এলাকার ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় এ বছর আমাদের জমিতে উৎপাদিত বেগুন, কলাসহ মৌসুমী ফল আম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে।
ব্রিজ ভাঙার কারণে ঢাকার ব্যবসায়ীরা আসতে পারেনি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করায় তাদের কাছে কম দামে জমির উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বিক্রি করতে হয়েছে। ব্রিজটি পুননির্মাণ না করায় এ আঞ্চলের কৃষক তাদের পণ্য সামগ্রী বিক্রিতে নায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে তারা জানান।
অভিরাম গ্রামের মালেকা বেগম জানান, আগে এই সড়ক দিয়ে অনেক গাড়ি চলাচল করত। ব্রিজটি ভাঙার কারণে চলাচল কমে গেছে। এজন্য তাদের পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়।
বাঁশতৈল ইউপি মেম্বার আব্দুল মান্নান ও যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম জানান, পাহাড়ি এলাকার মাটি যেমন শক্ত তেমন নরম। এ এলাকার মানুষের চলাচলে একমাত্র পাকা সড়ক এটি। ব্রিজটি ভাঙায় এই বর্ষা মৌসুমে এ এলাকার মানুষের চলাচল করা দুস্কর হয়ে পড়েছে। ব্রিজটি দ্রুত পুননির্মাণের দাবি জানান তারা।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, ব্রিজটি পুননির্মাণের জন্য প্রাথমিক নিবন্ধন হয়েছে। দ্রুত টেন্ডারের মাধ্যমে ব্রিজটি পুননির্মিত হবে বলে তিনি আশা করছেন।