প্রতিবছরের মতো এবারও জেঁকে বসেছে শীত। ঝাঁকে ঝাঁকে এসেছে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। তাদের কলকাকলিতে ভরে উঠেছে মৌলভীবাজারের হাওর, বাঁওড়, বিল, লেকসহ অসংখ্য জলাশয়।
জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের করতল গ্রামের ঐতিহাসিক শের-শাহর দীঘি মুখরিত হয়ে উঠেছে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির আগমনে। ওরা শীতে আসে আবার গরমে চলে যায়। তাই আদর করে এদের বলা হয় অতিথি পাখি।
এ দীঘিতে তিন বছর ধরে পরিযায়ী পাখিরা আসে। ব্যক্তি মালিকানাধীন দীঘির মালিক ও এলাকাবাসী পাখিগুলোর সঙ্গে আত্মীয়র মতোই আচরণ করেন। তারা পরিযায়ী পাখির ক্ষতি হোক এমন কোনো কাজ করেন না।
পাখিরাও যেন তাদের আতিথেয়তা বোঝে। মাঝে মাঝে নিষ্ঠুর শিকারিরা এলে এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে বাধা দেন। পথচারীরাও চলাচলের সময় অতিথি পাখির ওড়াউড়ি আর দীঘির জলে ডুব দেয়া দৃশ্য উপভোগ করেন। ছবি তোলেন, কেউ আবার ভিডিও ধারণ করেন।
একটু উষ্ণতার জন্য পাখিগুলো সুদুর সাইবেরিয়া ও মধ্যএশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আসে। এদের মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস, কালিম, বাটুল, চখাচখি, শামুকখোলসহ আরো নাম না জানা অনেক পাখি।
দীঘির পাশের বাড়ির আব্দুল গনির ছেলে তুহিন বলেন, তিন বছর ধরে শীত এলেই পরিযায়ী পাখি আসে। আমরা পাখিদের সঙ্গে আত্মীয়র মতো আচরণ করি। এজন্য তারা প্রতি বছর আসে। আমাদের খুব আনন্দ লাগে। মানুষ আনন্দ পায়।
করতল গ্রামের ফজলু মিয়া বলেন, প্রতি বছর পাখি আসে। আমরা আনন্দ পাই। পাখিগুলো আমাদের কোনো ক্ষতি করে না। পোকা মাকড় আর দীঘির ছোট মাছ খায়। এলাকার সবাই নজর রাখেন যাতে কেউ শিকার করতে না পারে।
তিনি বলেন, মানুষের বেশি সমাগম হলে তারা চলে যায়। আবার তিন চার দিন পর চলে আসে। তাই আমরাও বেশি ছবি তুলতে বাধা দিই।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পাল বলেন, আমি দেখেছি প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসছে। দেখতে ভালো লাগে। শিকারির উৎপাত থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
নদী বন্দর / পিকে