বগুড়ার সোনাতলার বালুয়াহাট ইউনিয়নের ছয়ঘোড়া পাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী খয়বর মন্ডলের ছেলে আমিরুল ইসলাম। পড়াশোনা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর অভাবের তাড়নায় আর পড়াশোনা করা হয়ে ওঠেনি তার। স্কুলপড়ুয়া ছোট্ট দুই মেয়ে নিয়ে আমিরুলের সংসার।
আমিরুল একদিন ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখতে পান বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ। এরপর তার আরও আগ্রহ জন্মায়। তিনি ভালোভাবে মাছ চাষের ভিডিওগুলো দেখেন এবং তার স্ত্রীকে বলেন। প্রথমে তার স্ত্রী সায় না দিলে এক প্রকার জোর করেই ব্যবসার জমানো টাকা দিয়ে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের উপকরণ কেনেন এবং মাছ চাষ শুরু করেন।
আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে আমার কাজে পরিবার সায় দিতে চায়নি। অবাধ্য হয়েই মাছ চাষ শুরু করি। এগারো কেজি ছোট পোনা মাছ দিয়ে মাছের খামার তৈরি করি। সেগুলো বড় হতে থাকে। ১১ কেজি মাছের পোনা থেকে মাছ হয় ৪০০ কেজি। যা ছয় চালানে খুব অল্প সময়ে ৩ লাখ টাকা বিক্রি করি। মাছ চাষ করেই এখন আমার মেয়েদের পড়ালেখা ও সংসার চলে।’
এ বিষয়ে আমিরুলে স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী যখন আমাকে এ বিষয়ে বলে, আমি ভাবি এভাবে ছোট জায়গায় কি মাছ চাষ সম্ভব? এরপর আমার স্বামী জোর করেই মাছ চাষ করেন। প্রথম চালানে ৫০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়। তখন খুবই আশ্চর্য হই। আমার স্বামী ঝুঁকি নিয়ে মাছ চাষ করে সফল। এখন গ্রামের অনেকেই তার কাছে আসেন। তাকে দেখে অনেকেই বায়োফ্লকে মাছ চাষে আগ্রহী হয়েছেন।’
সোনাতলা উপজেলা মৎস্য অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি এখনো আমিরুলের মাছের খামার দেখতে যাইনি। তবে শুনেছি। আমি শিগগিরই যাবো। তার যদি কোনো সহায়তার প্রয়োজন হয়, আমি করবো। যদি ট্রেনিংয়েরও প্রয়োজন পরে, আমরা উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’
বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে চোখেমুখে খুশির ঝিলিক আমিরুলের। তিনি সরকারি কোনো সহায়তা পেলে মাছের খামারটি আরও বড় করবেন। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করতে চান তিনি।
নদী বন্দর / জিকে