পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার কুয়াকাটা-মিশ্রীপাড়া সড়কের দোবাসীপাড়া খালের ওপর নির্মাণাধীন ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি ধসে পড়েছে।
রোববার (২৭ মার্চ) সকালে হঠাৎ ব্রিজের গার্ডার দুটি ধসে পড়ে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ব্রিজে কর্মরত শ্রমিক আবু জাফর বলেন, ‘আমরা চার-পাঁচজন ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা কাঠ ও টিন আনতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ হলে আমরা দ্রুত সরে যাই। এরমধ্যেই ব্রিজটি ভেঙে পড়ে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুয়াকাটা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈয়দ সোহেল অ্যান্ড দ্বীপ এন্টারপ্রাইজ। এর ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ২৬ লাখ ১৫ হাজার ৮৮৩ টাকা। গত ২০২০ সাল থেকে ব্রিজটি নির্মাণ কাজ চলছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের কাঁচামাল ও অপরিকল্পিত ডিজাইনের ফলে এই ব্রিজটি ধসে পড়েছে।
লতাচাপলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজটির কাজ করেছে। যেখানে তিন-চারটি গার্ডার প্রয়োজন সেখানে মাত্র দুটি গার্ডার দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিম্নমানের জিনিসপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ব্রিজটি ভেঙে গেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা হালিম বলেন, ‘আমরা গত ১০-১৫ বছর প্রায় তিন-চারটি ইউনিয়নের মানুষ চরম দুর্ভোগে ছিলাম। মনে করছিলাম ব্রিজটি হচ্ছে একটু শান্তিতে চলতে পারব। কিন্তু তাও কাজ শেষ হওয়ার আগে ভেঙে পড়ল। সরকারের উচিত এদের বিচারের আওতায় আনা। সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করা উন্নয়ন প্রকল্পে এমন অনিয়ম মেনে নেয়া যায় না।’
নির্মাণাধীন ব্রিজটি কুয়াকাটা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশরাফ আলী শিকদার বলেন, ‘এই ব্রিজটির কাজ যাতে ভালোভাবে হয়, সে জন্য আমি যথেষ্ট তদারকি করেছি। কিন্তু এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ইঞ্জিনিয়ার মিলে মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট এবং কাজের ধীরগতির কারণে আজ ব্রিজটি ভেঙে গেল।’
কুয়াকাটা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মিজানুজ্জামান বলেন, ‘আমি মাত্র ক-দিন হলো এখানে যোগ দিয়েছি। আমি আসলে বলতে পারব না কীভাবে এটা হলো। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি।’
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘আজকে কুয়াকাটা পৌরসভার যে ব্রিজটি ভেঙে গেল, এটা আসলে অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা তদন্ত করব। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আজাদ। তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
নদী বন্দর / সিএফ