সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যাদুকাটা নদীসহ সীমান্ত এলাকার সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সীমান্ত এলাকা ঘেঁষা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে রান্না করাসহ গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।
এলাকাবাসী জানান, হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়লে ভোগান্তির শেষ থাকে না। রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে থাকায় ঘরবন্দি হয়ে থাকতে হয়। এ সময় রান্নাসহ গরু-মহিষ নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়।
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সীমান্ত এলাকার মানুষ। প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। দিনের পর দিন অনাহারে ছেলে-মেয়ে বউকে নিয়ে কাটাতে হয়। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় আমাদের খোঁজ খবর ও কেউ রাখে না।’
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা শামিম মিয়া বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়লে ভোগান্তির শেষ থাকে না। টানা বৃষ্টি হওয়ায় আমার ঘরের ভেতরে পানি ডুকে পড়েছে। শুধু তাই নয় আমার গোয়াল ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। তাই গরু ও মহিষ নিয়ে এখন রাস্তায় আছি।’
সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা কদর আলী বলেন, ‘ওই পানি আমাদের জন্য আশীর্বাদ আবার অভিশাপও। একদিকে ওই পানি হলে আমরা যেমন খুশি, অন্যদিকে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সীমান্ত এলাকার মানুষ তাই সর্ব প্রথম পাহাড়ি ঢলের কবলে আমাদেরকে পড়তে হয়। ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে যায়। আমরা কোনোরকমে থাকতে পারলেও প্রতি বছর গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। বর্তমানে আমার চারটি মহিষ নিয়ে রাস্তার ওপর আছি।’
এদিকে পাহাড়ি ঢলে শক্তিয়ারখলা ও আনোয়ার পুর সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে তাহিরপুর উপজেলার সড়ক যোগাযোগ দুদিন ধরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা বলে, ‘ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিসহ সুনামগঞ্জে আগামী আরও তিনদিন টানা বর্ষণের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকলে সুরমা নদীর পানিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। যাদুকাটা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
নদী বন্দর / পিকে