1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
বানের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে উত্তরের নিম্নাঞ্চল - Nadibandar.com
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১
  • ১২৬ বার পঠিত

করোনা মহামারির মধ্যেই দেশে চলছে বন্যার প্রাদুর্ভাব। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীগুলোর পানি বাড়ছে হুহু করে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। গতকাল রবিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসছে ৪৮ ঘণ্টা বা দুই দিনের মধ্যে বন্যা সৃষ্টি হতে পারে।

কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বর্তমানে হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ফেনী জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। ক্রমান্বয়ে দেশের ২০ থেকে ২৫টি জেলা প্লাবিত হতে পারে। এ বন্যা কোনো কোনো জেলায় তিন থেকে চার দিন, আবার কোনো কোনো জেলায় ১৫ থেকে ২০ দিন স্থায়ী হতে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি বাড়ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং কাছাকাছি ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার নদীর পানি দ্রুত বেড়ে কতিপয় স্থানে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

গতকাল রবিবার দুপুরে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে নিজ অফিস কক্ষে জরুরি বৈঠক করেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘বন্যাসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় তত্পর রয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। স্কুল-কলেজ, হাটবাজারসহ নদীভাঙন রোধে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সারা দেশে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি এবং অনলাইনে নির্দেশনা দিচ্ছি।’

এদিকে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের নদীগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে সোনাহাট স্থলবন্দর, মহাসড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা। কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে ৫০টি চরগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পাট, ভুট্টা, আউশ ধান, বীজতলা ও সবজি খেত নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন ঠেকানোর কাজ চলছে বলে দাবি করেছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রাউতারা এলাকার অস্থায়ী রিং বাঁধ ভেঙে দেওয়ায় সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর জেলার চলনবিল অধ্যুষিত আটটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে এসব উপজেলার ৪৫ হাজার হেক্টর জমি। ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়া ও চিলমারী দুটি পয়েন্টে পানি বাড়ছে দ্রুত। ফলে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকতার বেশ কয়েকটি চরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পাট, বীজতলাসহ ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। তিস্তার পানি বিপত্সীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদীসংলগ্ন ৩০টি চরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে ফসলের ক্ষেত। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের ২৫টি পয়েন্টে ভাঙন তীব্ররূপ নিয়েছে। গত তিন দিনে এসব এলাকায় তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া গেজ স্টেশনে ছয় সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা গতকাল বিকাল পর্যন্ত ৭ দশমিক ৭৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নেত্রকোনায় বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নতুন করে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙনে চোখের পলকেই বিলীন হচ্ছে নানা স্থাপনা। নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌর সদরের শিবগঞ্জ, ডাকুমারা, কামারখালী, বহেরাতলী, বড়ইকান্দি, রানীখং ও দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ফারংপাড়া, বিরিশিরি ইউনিয়নের চৈতাটি, বারইপাড়া গ্রামের বেশ কিছু অংশ ভেঙে গেছে। উজানের ঢল আর টানা বর্ষণে বাড়ছে কুড়িগ্রামের ধরলার পানি। আর ভাঙনের তাণ্ডব শুরু হয়েছে মেকলি, ধনিরাম, গোড়কমন্ডল, চর কৃষ্ণপুর, পাঁচগাছি, সারডোবসহ বিভিন্ন স্থানে। নওগাঁর ধামইরহাটের আত্রাই নদীর বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। প্রায় ১৫০ মিটার জায়গা ধসে যাওয়ায় যেকোনো মুহূর্তে বাঁধটি ভেঙে যেতে পারে।

ডিএনডির ভেতর ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি

প্রবল বর্ষণে ডিএনডির (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) ভেতর ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণ জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট। সেখানে নৌকা চলছে। কোথাও হাঁটু কোথাও কোমর পানিতে তলিয়ে আছে ডিএনডি এলাকা। শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও কেমিক্যালযুক্ত পানি, স্যুয়ারেজের পানি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে ফতুল্লার পৌষাপুকুর ও লালপুর এলাকায় জলাবদ্ধতার চিত্র ভয়াবহ। ঐ সব এলাকার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার তিনটি নদীর পানি বেড়েছে। গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় তীব্র ভাঙনে কমপক্ষে ২৫টি বাড়ি বিলীন হয়েছে।

সদরপুর (ফরিদপুর) সংবাদদাতা জানান, উপজেলায় পদ্মা নদী ও আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাপক এলাকা জুড়ে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। চরম আতঙ্কে আছেন চরের হাজার হাজার মানুষ।

গঙ্গাচড়া (রংপুর) সংবাদদাতা জানান, উপজেলার ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড ভাঙনে কোলকোন্দ ইউনিয়নে পাঁচটি বাড়ি তিস্তায় বিলীন হয়েছে।

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, রামপুর ডিসি সড়ক ধসে পড়ে লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সোনাকানিয়া, বড়হাতিয়া, মার্দাশা, এওচিয়া, পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নে যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষ।

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, জেলার কলমাকান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালিহালা গ্রামে শনিবার দুপুরে বন্যার পানিতে পড়ে ১৮ মাস বয়সি রবিউল আওয়াল নামের এক শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে।

নদী বন্দর / সিএফ

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com