ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকায় এক বছর আগে নির্মিত স্থায়ী বাঁধ ডেবে গিয়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। বর্ষার শুরুতেই বাঁধের এ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের নির্মিত চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকায় তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু বাঁধটি সম্পন্ন হওয়ার এক বছর যেতে না যেতেই হাজীগঞ্জ বাজার এলাকায় কয়েকটি অংশ হুমকির মুখে পড়েছে।
ফরিদপুর পাউবো অফিস সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙন কবলিত এমপিডাঙ্গী, চরহাজীগঞ্জ বাজার ও চরহোসেনপুরের সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকায় নদী শাসনের কাজ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আলাদাভাবে সাত গ্রুপের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ বাঁধের কাজ সম্পন্ন করেছে। এ কাজে প্রথম পর্যায়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডার্ম্পি এবং পরবর্তীতে সিসি ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
সরেজমিনে চরভদ্রাসনের হাজীগঞ্জ বাজারের গিয়ে দেখা যায়, বাজার সংলগ্ন পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির পানির চাপে ডেবে গেছে, কোথাও কোথাও বাঁধে ফাটল ধরেছে।
এই বাঁধ নির্মাণ কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন বলেন, ‘উপজেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাজার এটি। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার বাজার রক্ষার্থে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু বাঁধটি নির্মাণের এক বছরে যেতে না যেতেই বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ল। যা দুঃখজনক ও বিপদজনক।’
চরভদ্রাসন হাজীগঞ্জ বাজার বর্ণিক সমিতি সভাপতি কবির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেক টাকা দিয়ে এই অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধ করে দিয়েছেন, কিন্তু আজ তা বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। কোথাও ডেবে যাচ্ছে।’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘কেবল বর্ষার শুরু। এখনই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে ভরা বর্ষার সময় বড় ধরনের বিপদ আসতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘বাঁধের কোথাও কিছু হলে তা ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেই নিজ দায়িত্বে ঠিক করে দিতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ডেকে হাজীগঞ্জ বাজার এলাকার বাঁধের পরিস্থিতি বিষয়ে জানানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সমাধান হবে।’
নদী বন্দর / বিএফ