২০২০ সালের মার্চে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর অনলাইনে বেচা-কেনার পরিমাণ বেড়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতার নির্ভরশীলতাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে। প্রাথমিকভাবে ক্রেতার সচেতনতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একজন উদ্যোক্তার যোগ্যতা, দক্ষতা ও ক্রেতার সার্ভিস বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্জন। এসব জানা না থাকায় অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছেন।
বর্তমানে অনেক মানুষ অনলাইন ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে চাকরির সুযোগ কম থাকায়, অনেকের চাকুরি চলে যাওয়ায়, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ও বেকার অনেকেই এখন অনলাইন ব্যবসার দিকে ধাবিত হয়েছেন।
এখান থেকে অনেকেই স্থায়ীভাবে এ উদ্যোগের সাথেই নিজেকে সম্পৃক্ত করছেন। কিন্তু অধিকাংশ উদ্যোক্তা ব্যবসার উপর জ্ঞান অর্জন না করে বিজনেস শুরু করে দিয়েছেন। যেটার ফলস্বরূপ পুরো ইন্ডাস্ট্রি এবং ক্রেতার উপর প্রভাব পড়ছে।
একজন উদ্যোক্তা যখন ব্যবসার জ্ঞানার্জন না করে উদ্যোগ শুরু করে তখন সমস্যা হয়ে থাকে বিজনেস শুরু করার প্রাথমিক ধাপে, সঠিকভাবে পণ্যের উপস্থাপনায় ভুল, কাস্টমার কেয়ারিংয়ে ভুল, সঠিকভাবে মার্কেটিং করতে না পারা, পণ্য ডেলিভারিতে সমস্যা তৈরি করা, সার্ভিস পরবর্তীতে কেয়ারিংয়ে গ্যাপ, ক্রেতাকে সঠিক সময়ে রেসপন্স করতে না পারাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভুল উপায়ে বিজনেস পরিচালনা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে কারুকর্মের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা ফাতেমা মম বলেন, আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গত ৩-৪ বছরে হুজুগের বশে কত মানুষ অনলাইনে ব্যবসা খুলেছে আর ঝড়ে গেছে। টিকে থাকার সংখ্যাও খুব কম। যদিও টিকে যায় তার মাঝে অনেকে মার্কেট নষ্ট করে। যদি এ বিষয়গুলো নিয়ে একটু স্টাডি করে মার্কেট পর্যালোচনা করে তাহলেই কিন্তু ব্যবসা সুন্দর করতে পারে। ব্যবসায়িক পরিবেশটাও ঠিক থাকবে।
এখানে সমাধানের উপায় হচ্ছে, বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম ফ্রি ট্রেনিংয়ের আয়োজন করছে সেগুলোতে জয়েন করা, অনেক প্লাটফর্মের পেইড কোর্স আছে সেগুলো থেকে শেখা, কিছু প্রতিষ্ঠান আছে শেখানোর পাশাপাশি সরাসরি মেন্টরিং করে থাকেন তাদের সাথে শেখানে জয়েন করা। এরকম একটি ফেসবুক ভিত্তিক প্লাটফর্ম ‘ই-বিজনেস স্কলার’। গ্রুপটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে সেখানে বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি মেন্টরিং করে থাকেন উদ্যোক্তাদের। এছাড়াও গ্রুপটিতে প্রতিদিনই ব্যবসা সম্পর্কে বিভিন্ন পোস্ট করা হয়। অন্যান্য প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে অন্যতম ওমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই), নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন ইত্যাদি।
তবে এটাও বলতে হয় যে, অনেকেই তার ব্যবসা শুরু করছে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে এবং শুরু করার পর থেকে শিখে ব্যবসায় পরিচালনা করছে।
বাংলাদেশের অনেক উদ্যোক্তা তার ব্যবসাকে এখনো ডিজিটালাইজেশনে নিয়ে আসতে পারেনি। এখানেও বলতে হয় জ্ঞান অর্জনের অভাব। ব্যবসায়ের দ্রুত প্রসারে ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প নেই। অনেক উদ্যোক্তা বুঝতেই পারে না সহজ উপায়ে কিভাবে নিজ উদ্যোগকে ডিজিটালাইজেশনে রূপান্তরিত করা যায়।
সমাধানের উপায় হতে পারে, প্রাথমিকভাবে ফেসবুকের মাধ্যমে বিজনেস পেইজ তৈরি করে ব্যবসা পরিচালনা করা পরবর্তীতে ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া। ব্যবসা ভালো করার জন্য ব্যবসায়িক জ্ঞান অর্জন বেশি ভূমিকা পালন করে। উদ্যোক্তাদের নিয়মিত ব্যবসায়িক জ্ঞান অর্জন হতে পারে তার সফলতার অন্যতম মাধ্যম।
নদী বন্দর / এমকে