তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশ’ আফগান শরণার্থী। তাজিক সীমান্তরক্ষীদের বরাতে বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা খোভার জানিয়েছে, গত দুইদিনে অন্তত ৩৪৭ জন আফগান শরণার্থী প্রাণ বাঁচাতে তাজিকিস্তানে প্রবেশ করেছে। তবে সীমান্ত পারাপারের সময় দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে সকল মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার কার্যক্রম শুরুর পর গত কয়েক সপ্তাহে দেশটির বিশাল অঞ্চলের দখল নিয়েছে তালেবান। গত জুনে তারা তাজিকিস্তানের সঙ্গে প্রধান সীমান্ত ক্রসিং শির খান বন্দরের দখল নেয়। আর গত বুধবার পাকিস্তান সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং স্পিন বলদাকের দখল নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। অবশ্য আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তালেবানকে হটিয়ে আবারও সীমান্ত ক্রসিংটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সরকারি বাহিনী।
তাজিকিস্তান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত দুইদিনে সীমান্ত পার হওয়া আফগান শরণার্থীদের মধ্যে ৬৪ বালক এবং ১১৩ বালিকা রয়েছে। তারা আফগানিস্তানের বাদাখশান প্রদেশ থেকে এসেছে।
এক বিবৃতিতে খোভার বলেছে, তাজিক সীমান্তরক্ষীরা মানবতাবাদী নীতি এবং ভালো প্রতিবেশীসুলভ আচরণে উদ্বুব্ধ হয়ে আফগান শরণার্থীদের প্রবেশ করতে দিয়েছেন। এসব শরণার্থীকে মুরগাব অঞ্চলের দুটি স্থানে আশ্রয় দেয়া হচ্ছে।
তাজিক সীমান্তরক্ষীরা জানিয়েছেন, তারা আফগান শরণার্থীদের কাছ থেকে অন্তত সাড়ে তিন কেজি মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছেন। এগুলোর পাশাপাশি শরণার্থীরা ৩০০ ইয়াক, তিনটি উট, ৩০টি ঘোড়াসহ বেশ কিছু গবাদি পশুও নিয়ে এসেছে। তাজিক বাহিনী জানিয়েছে, আফগানিস্তান-তাজিকিস্তান সীমান্তের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুসারে, আফগানিস্তানের অন্তত ৭০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে তালেবানের দখলে এবং প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন জেলা সরকারি বাহিনীর হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। বাদাখশানেও জোরদার অভিযান চালাচ্ছে তালেবান যোদ্ধারা। এর জেরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাজিক-সীমান্তবর্তী আফগান ঘাঁটিগুলো থেকে সৈন্য পালানোর ঘটনা ঘটছে। গত সপ্তাহেও তালেবানের আক্রমণের মুখে প্রায় হাজারখানেক আফগান সৈন্য তাজিকিস্তানে পালিয়ে যায়। অবশ্য তাদের ফিরিয়ে আবারও তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামানোর কথা জানিয়েছে আফগান কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স
নদী বন্দর / বিএফ