ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে বন্যা প্রবণ চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশে কামারশোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারতলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় কাম-বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। ফলে বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে নির্মাণাধীন ভবনের নিচের অংশ। মরীচিকা ধরে নষ্ট হতে বসেছে পিলারের রটগুলো।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অধীনে বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৪ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে চারতলা বিশিষ্ট কামারশোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। সে মোতাবেক দরপত্রে অংশগ্রহণ করে জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়।
গত বছরের ২৩ আগস্ট থেকে কাজ শুরুর কার্যাদেশ দেয়া হয়। এ কাজের শেষ তারিখ ২০২২ সালের মার্চ মাস। কিন্তু আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বেজ ঢালাই দিয়ে হাফ কলাম করে তা ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে কলামের রডগুলো বৃষ্টিতে ভিজে মরীচিকা ধরে কার্যক্ষমতা হারাতে বসেছে।
এর মধ্যে খানিকটা অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। আর কার্যাদেশ পাওয়ার গত প্রায় এক বছরে কাজের অগ্রগতি বলতে মোট কাজের ১০-১২ শতাংশের বেশি নয়।
কামারশোন গ্রামের মজনু সরকার, আইয়ূব আলী ও আলতাব হোসেন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কামারশোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণের কার্যাদেশ পাওয়ার প্রায় সাত মাস পর ২০২১ সালের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে কাজ শুরু করেন। এপ্রিল মাসে বেজ ও কলাম ঢালাইয়ের পর অদ্যাবধি আর কোনো কাজ না করে ফেলে রেখেছেন। বন্যার পানি নেমে যেতে চলতি বছর প্রায় শেষ হয়ে যাবে। কাজেই নিশ্চিত করে বলাই যায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ কাজ শেষ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শামসুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যা প্রবণ এলাকা হওয়ায় এমনিতেই ৩ থেকে ৪ মাস কাজ করা যায় না। আর আশ্রয়ণ কেন্দ্রের নকশা চারবার পরিবর্তন করার কারণে কাজের ধীরগতি। তবে কলামের ঊর্ধ্বমুখী উন্মুক্ত রডগুলোর কোনো ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের কাজের তদারকি কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে কাজের ধীরগতি। আর এজন্য ঠিকাদারকে দুবার কারণ দর্শানোর পত্র দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বমুখী ওই উন্মুক্ত রডগুলো বৃষ্টিতে ভিজে যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য পরামর্শ সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নদী বন্দর / এমকে