ভরা মৌসুমেও মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে মিলছে না ইলিশ। ফলে চরম হতাশায় দিন কাটছে জেলেদের। জেলেরা বলছেন ভরা মৌসুমে ইলিশ পাওয়ার আশায় প্রতিদিন দল বেঁধে নদীতে গেলেও মিলছে না কাঙিক্ষত ইলিশ। আর যা পাচ্ছেন তা দিয়ে ট্রলারের তেলের টাকাও উঠছে না। যার কারণে অনেক জেলে নদীতে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিদিনই মহাজন ও তেলের দোকানের দেনা পরিশোধের চাপে বিপাকে রয়েছেন তারা।
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি মৎস্য ঘাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, চলতি ভরা মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকারের আশায় প্রতিদিনই জাল, নৌকা, ট্রলার ও বরফ নিয়ে দল বেঁধে নদীতে ছুঁটছেন জেলেরা। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নদী চষে বেড়ালেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ফলে চরম হতাশা নিয়ে তীরে ফিরছেন তারা।
এলাকার জেলে মো. আব্দুল হাকিম মাঝি, মো. ফারুক মাঝি ও ইউনুছ মাঝি জানান, ইলিশের ভরা মৌসুমে প্রতিদিনই ৭-৮ জন জেলে নদীতে যাই। সোমবার ভোর রাত থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছয়জন নদীতে গিয়ে মাত্র চারটি ইলিশ পেয়েছি। সন্ধ্যায় মৎস্য ঘাটে গিয়ে এক হাজার টাকা বিক্রি করছি। তেলের দোকানে ছয়শ টাকা দিছি। বাকী চারশ টাকা ছয়জন ভাগ করে নিয়েছি। কিন্তু ওই টাকা দিয়ে সংসারের জন্য কোনো বাজার করতে পারিনি।
মো. শাজাহান মাঝি, তরিক মাঝি ও জসিম মাঝি জানান, গত বছরের এই সময় অনেক মাছ শিকার করে ভালোভাবে ঈদ করতে পেরেছি। কিন্তু এবছর নদীতে মাছ নেই, ঈদ করমু কেমনে।
তারা আরও জানান, নদীতে যে মাছ পাই তা দিয়ে তেলের টাকাও উঠে না। এ কারণে অনেক জেলে নদীতে যায় না। এছাড়াও মহাজন ও তেলের দোকানের টাকা পরিশোধের চাপ ও সংসার পরিচালনার চাপে বিপাকে রয়েছি আমরা।
তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়ৎদার মো. শামিম জানান, ঢাকার পাইকারদের থেকে লাখ লাখ টাকা অগ্রিম এনে জেলেদের দাদন দিয়েছি। লকডাউনের করণে ঢাকার পাইকারদের মাছ পাঠাতে পারিনি। এখন তো লকডাউন নেই, তাই ঢাকার পাইকাররা আমাদের চাপ দেয়। কিন্তু কি করবো নদীতে জেলেরা মাছ পাচ্ছেন না। আমরা খুবই বিপাকে রয়েছি।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় নদীতে ইলিশ সংঙ্কট রয়েছে। তবে চলতে মাসের শেষে দিকে বৃষ্টিপাত হলে কাঙিক্ষত ইলিশ পাওয়া যেতে পারে। তখন জেলেদের দুঃখ দূর হবে।
নদী বন্দর / এমকে