চলতি মৌসুমে অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। এতে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে রাজ্যটির একাধিক জেলা। বানের তোড়ে বহু মানুষের প্রাণহানিই শুধু নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক লাখ হেক্টর কৃষিজমি। প্রাণ বাঁচাতে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
নবান্ন সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, অতিবৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে বুধবার বিকেল পর্যন্ত রাজ্যটিতে কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দেয়ালচাপায় ছয়জন, পানিতে ডুবে সাতজন, বজ্রপাতে ছয়জন ও বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন দু’জন। এছাড়া কালিম্পংয়ে ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে আরও দু’জনের।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দাবি, ইতোমধ্যে ১ লাখ ১৩ হাজার ১৮১ জনকে দুর্গত এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে ৩৬১টি, যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষ।
নবান্ন সূত্রের খবর, শিলাবতী, কংসাবতী ও দামোদরের পানি বেড়ে যাওয়ায় হাওড়া-মেদিনীপুর ও হুগলির বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও সেতুতে ফাটল ধরেছে। প্রাণ হাতে করে তার ওপর দিয়েই পার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
এদিকে, এই বন্যাকে ‘ম্যান মেড’ উল্লেখ করে এর জন্য দামোদর ভ্যালি করপোরেশনকে (ডিভিসি) দায়ী করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার অভিযোগ, ডিভিসি রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই পানি ছেড়ে দিয়েছে। এর সঙ্গে প্রবল বর্ষণ যোগ হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে দামোদর ভ্যালি করপোরেশন। ডিভিসির নির্বাহী পরিচালক সত্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দামোদর উপত্যকা বাঁধ নিয়ামক কমিটিতে ডিভিসির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সরকারের প্রতিনিধিও রয়েছে। পানি ছাড়ার আগে কমিটির প্রত্যেক সদস্যের লিখিত অনুমতি নেয়া হয়। এবারও তার ব্যক্তিক্রম হয়নি।