আনারস বছরের সবসময়ই কমবেশি পাওয়া যায়। তবে এ মৌসুমে বাজারে আনারস বেশ সহজলভ্য। ভিটামিন সি’তে ভরপুর আনারস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দুর্দান্ত কাজ করে। এ ছাড়াও নিয়মিত আনারস খেলে শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতা কেটে যায়।
টক-মিষ্টি স্বাদের এই রসালো ফলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস থাকে। এ ছাড়াও আনারসে থাকে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম। ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। যা ওজন কমাতে কার্যকরী। এটি কোলেস্টেরল ও চর্বির সমস্যা কাটাতে সাহায্য করে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ ফলের জুড়ি নেই।
বর্ষার মৌসুমে অনেকেই শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন। সেইসঙ্গে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে সবাই এখন বিপর্যস্ত। এ সময় সবারই উচিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এ সময় আনারস খেলে নিস্তার মিলবে যেসব রোগ থেকে-
>> আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত আনারস খেলে চোখের যাবতীয় রোগ থেকে মুক্তি মেলে।
>> করোনাকালে অনেকেই হজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এমনকি করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে এ সমস্যা। তাই এ সময় শরীরের হজমশক্তি বাড়াতে আনারস খেতে পারেন। আনারসে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম থাকে, যা হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
>> বর্ষার মৌসুমে সাধারণ ফ্লু হোক বা কোভিড কিংবা ডেঙ্গু- সব অসুখের শুরুটাই হয় জ্বর-ঠান্ডা-কাশি দিয়ে। তাই এ সময় ভাইরাসজনিত ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে আনারস।
>> এ ছাড়াও জ্বর ও জন্ডিস প্রতিরোধেও আনারস বেশ উপকারী। সেইসঙ্গে নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা এবং ব্রংকাইটিসের বিকল্প ওষুধ হিসেবেও আনারসের রস খেতে পারেন।
>> আনারসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে। তাই পরিমিত আনারস খেলে বা এর তাজা রস পান করলে ওজন কমে দ্রুত। ওজন নিয়ন্ত্রণের পথ্য হতে পারে এই ফলটি।
>> আনারসে ক্যালসিয়াম থাকায় তা দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। নিয়মিত আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর সংক্রমণ কম হয়। এ ছাড়াও মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে আনারস বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৬। আনারসে থাকা ভিটামিন এ চোখের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করে। আনারস চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাওয়া রোগ ‘ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন’ হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। আনারসে থাকা বেটা ক্যারোটিন এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।
>> ত্বকের যত্নেও আনারস হতে পারে সেরা উপাদান। আনারসে থাকে প্রচুর ক্যালরি, যা আমাদের শক্তির যোগান দেয়। এতে থাকা প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়। এ ছাড়া ত্বকের তৈলাক্ততা, ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।
>> আনারসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত।
>> ক্রিমি দূর করতে আনারস কার্যকরী এক উপাদান। নিয়মিত আনারসের রস খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। কৃমি দূর করতে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে আনারসের রস খেতে পারেন।
>> আনারসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মারণব্যাধি ক্যান্সারকেও দমন করতে পারে। আনারসে আছে উচ্চ মাত্রায় পানিতে দ্রবণীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি। পানিতে দ্রবণীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহকে ফ্রি-রেডিকেল বা (মুক্ত মুলক) থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। ফলে ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগ দেহে বাসা বাঁধতে বাধাগ্রস্থ হয়।
>> আনারসে অনেক উপকারিতা থাকলেও এটি কারও কারও শরীরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। অনেকেরই আনারসে অ্যালার্জি থাকে। এর ফলে চুলকানি, ফুসকুড়ি ও ফোলাভাব দেখা দেয়। এ সমস্যায় থাকলে এড়িয়ে যাবেন আনারস। ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিকের রোগীরা শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা এড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে তবেই আনারস খেতে পারেন।
সূত্র: হেলথলাইন
নদী বন্দর / এমকে