1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
লিভার সিরোসিস কি-না বুঝবেন যেভাবে - Nadibandar.com
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন
নদী বন্দর ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১
  • ২৫২ বার পঠিত

লিভার দেহের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। শরীরের ক্ষতিকারক পদার্থগুলো সরিয়ে ফেলে লিভার। সেইসঙ্গে রক্ত পরিষ্কার করা এবং খাদ্য থেকে পুষ্টি তৈরি করার কাজও করে থাকে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গটি।

যকৃতের একটি মারাত্মক রোগ লিভার সিরোসিস। এর ফলে টিস্যুতে দাগের সৃষ্টি হয়, যা লিভারকে স্বাস্থ্যকর টিস্যুতে পরিবর্তন করে। যদি লিভার সিরোসিস বৃদ্ধি পেতে শুরু করে; তাহলে রক্তের প্রবাহ কমতে থাকে এবং লিভার তার কাজ করতে ব্যর্থ হয়।

লিভার সিরোসিস হওয়ার কারণ

এর প্রধান কারণ হলো হেপাটাইটিস এবং অ্যালকোহল আসক্তি। এ ছাড়াও লিভারে অতিরিক্ত মেদ জমলেও হতে পারে লিভার সিরোসিস। সেইসঙ্গে পিত্ত নালী দুর্বল, বেশি আয়রন জমে যাওয়া, উইলসন রোগ, বংশগত হজমে সমস্যা, পিত্ত নালী ত্রুটি কিংবা কিছু ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণেও লিভার সিরোসিস হতে পারে।

যদিও লিভার সিরোসিসের কোনো নিরাময় নেই। প্রাথমিক অবস্থায় এটি শনাক্তকরণ করা হলে দ্রুত সারিয়ে তোলা যায়। তবে শনাক্তকরণে দেরি হলে জটিলতা কমানো সম্ভব হয় না। বিশেষ করে চিকিত্সা না করা হলে, এটি মারাত্মক হতে পারে।

jagonews24

কারা ঝুঁকিতে আছেন?

লিভার সিরোসিস একটি সেকেন্ডারি হেলথ কন্ডিশন। যা লিভারের অন্যান্য সমস্যা বা রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। যদি আপনি লিভারের সমস্যার প্রাথমিক অবস্থায় তা চিকিৎসা না করেন; তাহলে এটি আরও খারাপ হবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সিরোসিসে পরিণত হবে। জেনে নিন কারা লিভারের বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকিতে আছেন-

>> বছরের পর বছর ধরে যারা অ্যালকোহল গ্রহণ করছেন।
>> যকৃতের বিষাক্ত প্রদাহ আছে যাদের।
>> অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ভুগছেন যারা।
>> অতিরিক্ত ওজন।
>> ব্যবহৃত সূঁচ দ্বারা পুনরায় ইনজেকশন গ্রহণ করেছেন এমন ব্যক্তি।
>> লিভারের অন্য কোনো রোগে যারা ভুগছেন।
>> অরক্ষিত যৌনতা।

এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে লিভার সিরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ রোগ থেকে বাঁচতে সচেতন হওয়া জরুরি। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, প্রাথমিক অবস্থায় লিভার সিরোসিসের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। লিভার যত ক্ষতিগ্রস্ত হয়; ততই শারীরিক বিভিন্ন উপসর্গ প্রকাশ পায়।

লিভার সিরোসিসের লক্ষণসমূহ

সহজেই রক্তপাত বা ক্ষত

আমাদের লিভার ভিটামিন কে এর সাহায্যে একটি প্রোটিন তৈরি করে, যা রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজন। এ ছাড়াও, লিভার পুরনো বা ক্ষতিগ্রস্ত রক্ত কণিকা ভাঙতে সাহায্য করে। যখন লিভার কোনো অসুখে ভোগে; তখন এটি পর্যাপ্ত প্রোটিন তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে সামান্য কেটে গেলেই রক্তপাত বা ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।

ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া (জন্ডিস)

জন্ডিস এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যায়। লিভার দ্বারা নিঃসৃত হলুদ-কমলা পিত্তরঙ্গের উচ্চ মাত্রার বিলিরুবিণে কারণে ত্বক এই রং ধারণ করে। যখন লিভারে সমস্যা বাড়তে থাকে; তখন এটি শরীরের পিত্তের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে লিভারের সমস্যা বাড়লে জন্সিও বেড়ে যায়।

jagonews24

হাত-পা বা গোড়ালি ফুলে যাওয়া (শোথ)

লিভার সিরোসিস হলে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের উৎপাদন কমে যায়। এ কারণে হাত-পা ও গোড়ালি ফুলে যায়। এই প্রোটিন রক্তকে আশেপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়া ঠেকায়। যখন প্রোটিনের উৎপাদন কমে যায়; তখন তা রক্তনালীতে জমা হতে শুরু করে। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলতে শুরু করে।

jagonews24

পেটে জমা তরল (অ্যাসাইটস)

দীর্ঘস্থায়ী লিভারের রোগে, পেটে তরল জমা হতে পারে। যা পেটের মেদ-ভুড়ির কারণ হয়। অনেকের পেট অনেকটা বড় হয়ে ফুলে যায়। লিভারের ত্রুটির কারণে, পেটের আস্তরণ এবং অঙ্গগুলোর মধ্যে তরল পদার্থ জমতে থাকে। এ কারণে ফুলে ওঠে পেট।

jagonews24

ওজন কমে যাওয়া

ডায়েটিং এবং ব্যায়াম ছাড়াও যদি অপ্রত্যাশিতভাবে ওজন কমে যায়; তাহলে তা উদ্বেগের কারণ। এটি লিভার সিরোসিসের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। তাই হঠাৎ ওজন কমতে শুরু করলে উপেক্ষা করবেন না। দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

jagonews24

এসব লক্ষণের পাশাপাশি আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন- মাড়ি রক্তপাত, প্রস্রাব গাঢ় হওয়া, যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া, চুল পড়া, রক্তক্ষরণ, বমি বমিভাব, নাক থেকে রক্তক্ষরণ, পেশি বাঁধা, হার্টবিট দ্রুত, স্মৃতি সম্পর্কিত সমস্যা, কাঁধে ব্যথা, ঘন ঘন জ্বর হয়, অনিদ্রা, বমি বমি ভাব, যকৃতের জায়গা স্পর্শে ব্যথা, দুর্বলতা ও হাত লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

লিভার সিরোসিস প্রতিরোধে করণীয়

>> লিভার সিরোসিস হলে দ্রুত অ্যালকোহল গ্রহণ বন্ধ করুন।

>> ডায়েটে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন। যার মধ্যে শাক-সবজি এবং ফল অবশ্যই রাখবেন। তেল এবং মশলাদার খাবার কমান। চা ও কফি কম খান।

jagonews24

>> লিভারের রোগ প্রতিরোধে হেপাটাইটিস আগে সারানো উচিত। হেপাটাইটিস বি এবং সি উভয় সংক্রমণই অরক্ষিত লিঙ্গের কারণে বা দরকারী ইনজেকশন দ্বারা ঘটে।

>> যৌনরোগ এড়াতে স্বাস্থবিধি মেনে চলুন। অন্য ব্যক্তির ব্যবহৃত সিরিঞ্জ ব্যবহার করবেন না।

>> যদি কারও অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার থাকে; তাহলে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া/লগইন টু হেলথ

নদী বন্দর / সিএফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com