ঝালকাঠি জেলার প্রায় ৩০০ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এখন পেয়ারার ফলন চোখে পড়ার মতো। এ বছর পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এ পেয়ারা দেশি জাতের ছোট পেয়ারা নয়, কাজি পেয়ারা। অন্যান্য অঞ্চলের পেয়ারার মতো এ পেয়ারা অত্যাধিক বড় না হলেও এ অঞ্চলের কাজি পেয়ারার একটা বিশেষত্ব আছে।
এ পেয়ারা অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়ে থাকে। কৃষি অফিস সূত্র জানায়, জেলার ২০৪টি গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে আগে দেশীয় জাতের পেয়ারা চাষ করা হত। কিন্তু এখন কাজি পেয়ারার চাষ অনেক বেড়ে গেছে। এ পেয়ারার নাম কাজি পেয়ারা হলেও এক কেজির ওপরে এ জাতের পেয়ারা খুব একটা দেখা যায় না।
অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশি জাতের পেয়ারার গাছ অনেক জায়গাজুড়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ির সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ায় এ পেয়ারা গাছ লাগানো হয়। এতে বেশি ফলন, বড় জাত ও মিষ্টি হওয়ায় দেশি বাংলা পেয়ারার চেয়ে কাজি পেয়ারা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে জেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় দেশি কাজি পেয়ারার বাম্পার ফলন হয়েছে। বিনা খরচ ও পরিশ্রমে গ্রামের লোকজন নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।
গ্রাম্য পাইকাররা কাজি পেয়ারা প্রতিটি ৩ থেকে ৪ টাকা দরে ক্রয় করে ৫ থেকে ৮ টাকায় বিক্রি করে থাকেন। এছাড়া এই অঞ্চলের দেশি পেয়ারা অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের পেয়ারা চাষি মো. হানিফ হোসেন বলেন, কাজি পেয়ারার একেকটি গাছ ৮০ থেকে ১২০ টাকায় কিনে এনে একটু ভালো জায়গায় রোপণ করা হয়। তবে কোনো পরিচর্যা ছাড়াই রোপণের পর থেকে প্রতি বছর একেকটি গাছ থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করা সম্ভব বলে তিনি আরও জানান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, এটি বিশেষ কোনো পেয়ারার জাত না হলেও এ অঞ্চলের মাটির উর্বরতা শক্তির বিশেষ গুণ থাকায় কেজি পেয়ারা বেশ সুস্বাদু হয়ে থাকে। তবে প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে এ পেয়ারার চাষ ও অধিক ফলনে গ্রামাঞ্চলের মানুষের দিন দিন সাফল্য বয়ে আনবে। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে কয়েকটি গ্রামে এ পেয়ারার চাষ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।