ফেরি, লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌযান যাতে পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে পারে, সেজন্য বাংলাবাজার-মাওয়া ফেরিঘাট চালুর দাবি করেছেন নৌ যাত্রীদের অনেকেই। তাদের মতে, বাংলাবাজার ঘাট স্থানান্তর হবে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
খুলনা থেকে আসা যাত্রী আ. মোতালেব মিয়া জানান, বাংলাবাজার ঘাট স্থানান্তর করে মাঝিকান্দিতে নেওয়া হলে সেই পদ্মা সেতুর নিচ দিয়েই যেতে হবে। তাছাড়া প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পদ্মা সেতু এলাকা দিয়ে যাতায়াতের ফলে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।
বরিশাল থেকে আসা কলেজছাত্রী মোনালিসা বলেন, প্রায় প্রতি বছরই মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটটি পদ্মার তীব্র স্রোতে ভাঙনের শিকার হয়। এবারও ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে শিমুলিয়া ঘাটটি এমনিতেই মাওয়া ঘাটে স্থানান্তর করতে হবে। তখন মাঝিকান্দি ঘাট হয়ে আবার পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে মাওয়া ঘাটে আসতে হবে। সেই পদ্মা সেতুর নিচ দিয়েই ফেরি চলাচল করতে হবে। তাই ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে বাংলাবাজার-মাওয়া ঘাট চালু করলে আমার মতে আর কোনো সমস্যা থাকে না। বাংলাবাজার ঘাট মাঝিকান্দিতে স্থানান্তর হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
যাত্রীদের অনেকেই মোনালিসার সঙ্গে একমত। তারা বলেন, পদ্মা সেতু মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটটি বারবার নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে। এছাড়া শরীয়তপুরের জাজিরাও নদীভাঙনের হুমকির মুখে। শুধু পদ্মা সেতুর পিলার নয়, শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি বরাবর পায়রা বিদ্যুৎ ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বেশ কয়েকটি পোল পদ্মায় স্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে ধাক্কা লেগেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ফেরি, লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌযান। ঘটতে পারে প্রাণহানির ঘটনাও।তাদের মতে, বাংলাবাজার ঘাটটি রেখে শিমুলিয়া ঘাট মাওয়া পুরাতন ঘাটে স্থানান্তর করলে পদ্মা সেতুর আর কোনো সমস্যা থাকে না। কারণ পদ্মা সেতু থেকে মাওয়া পুরাতন ঘাটটি প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে। তাই তারা বাংলাবাজার-মাওয়া রুট চালু করার পক্ষে।
মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক সুবল বিশ্বাস বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ বাংলাবাজার ঘাটটি ব্যবহার করছের। এ ঘাটটি স্থানান্তর হলে ২১ জেলার মানুষ ও বাস, ট্রাকসহ পরিবহন চালকদের দুর্ভোগ বাড়বে। পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে হলে বাংলাবাজার ঘাট রেখে মাওয়া ঘাট চালু করলে আর কোনো ঝুঁকি থাকবে না।
বাংলাবাজার ঘাট ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন মিয়া জানান, তীব্র স্রোতের কারণে পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগার ঘটনার পর থেকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ রুটে বড় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে তিনটি ছোট ফেরি দিয়ে জরুরি পরিবহন পারাপার করা হচ্ছে।
নদী বন্দর / সিএফ