রাজধানীর আরামবাগে অবস্থিত দেওয়ানবাগ শরিফের পীর সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগীকে দাফন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছনে বাবে মদিনা দেওয়ানবাগ শরিফে তার স্ত্রীর পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে আরামবাগে বাবে রহমতে তার নামাজে জানাজা হয়। জানাজার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা ৪৮ মিনিটে মারা যান দেওয়ানবাগী পীর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক ভক্ত ও মুরিদ ভিড় জমান আরামবাগ দরবার শরিফে। দুপুর আড়াইটার দিকে আরামবাগ দরবার শরিফের পাশের সড়কে জানাজা হয়। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। জানাজার আগে পীর দেওয়ানবাগীর ওছিয়ত অনুযায়ী ছেলেদের দরবারের ইমাম করার ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় ভক্তদের মধ্যে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
সেখানেই তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এরপর দেওয়ানবাগীর লাশ একটি ফুল সজ্জিত ট্রাকে মতিঝিলের বাবে মদিনায় নিয়ে যাওয়া হয়।
দেওয়ানবাগ শরিফের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, ‘ওনার (দেওয়ানবাগী) চার ছেলেকে দরবার শরিফের ইমাম করা হয়েছে। তবে মেজ ছেলে সৈয়দ ইমাম ড. আফছান কুদরত-ই খুদার নেতৃত্বে তারা চলবেন।’
মেহেদী হাসান আরও বলেন, ‘তার জানাজায় লাখ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুরিদরা এসেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ওনার স্ত্রী ২০০৯ সালে মারা যান। তাকে বাবে মদিনায় দাফন করা হয়, ওছিয়ত অনুযায়ী তাকে (দেওয়ানবাগী) তার স্ত্রীর পাশে দাফন করা হয়েছে। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় জানাজার পর জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গার্ড অব অনার দেয়া হয়েছে।’
১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার। মা সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নিজ এলাকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে দেওয়ানবাগী পীর ৩ নম্বর প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর ১৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টে রিলিজিয়াস টিচার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি মোট ১১টি দরবার ও শতাধিক খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
নদী বন্দর / পিকে