কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা এক দিনের ব্যবধানে বেড়েছে আরও ৮ সেন্টিমিটার।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও চলনবিলের পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য জেলা শহর ও পাঁচটি উপজেলায় মজুদ রাখা হয়েছে ১৭৬ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে সাত লাখ নগদ টাকা।
বিষয়টি রোববার (২৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন।
জানা গেছে, পানি বাড়ার ফলে প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন অব্যাহত থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষ, ভীতিও কাজ করছে এলাকার মানুষদের। বিপাকে পড়েছেন জেলার গো-খাদ্য খামারিরা।
রবিবার সকাল সোয়া ১০টায় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে আট সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে কাজিপুরে মেঘাই ঘাটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানায় পানি পরিমাপক ওমর আলী।
গত ১৪ আগস্ট থেকে শুর করে আজ পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নদী তীরবর্তী আরও কিছু নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্যা দুর্গতরা। বন্যা কবলিত এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে রোপা আমন খেত, বীজতলা, আখ, পাট, তিল ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, যমুনা নদীতে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি আমাদের জানা আছে, আমরা নিয়মিত পানির খোঁজ খবর রাখছি। বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষ বিশুদ্ধ পানির সংকটে পরে আছে।
তিনি আরও বলেন, জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও এক লাখ করে নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা সেটা তাদের চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো সময় বিতরণ করবেন। এ ছাড়াও জেলায় ৭৬ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। কোনো এলাকায় ত্রাণের প্রয়োজন আছে কি না তা নিয়মিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আবু হানিফ জানান, জেলায় এ পর্যন্ত বন্যায় ২ হাজার ৮ শত ৯০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এগুলো মধ্যে রয়েছে, রোপা আমন, বোনা আমন, সবজী , আখ ও বীজ তলা ।
নদী বন্দর / জিকে