বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রতিদিন প্রতিটি ঘরে প্রতিটি মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, কখন কার সন্তানকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। গুমের এ সংস্কৃতি চালু করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।’
সোমবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার ওপর নিপীড়ন কেন? কারণ একটাই, তিনি সত্য কথা বলেন। একজন বিবেকবান মানুষ। তিনি একজন সাংবাদিক, তিনি কি লিখবেন না? অবশ্যই লিখবেন। আর এ অপরাধে তিনি আজ কারাগারে। অথচ যারা দুর্নীতি করছে, সন্ত্রাস করছে, তারা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে, এমপি মন্ত্রী হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ আন্তর্জাতিক গুম দিবস। এ দেশে অনেকেই গুম হয়েছেন, হচ্ছেন। আর এসব গুমের মূলহোতা আওয়ামী লীগ সরকার। গুমের মতো একটি বিষয় আজ আমাদের জনগণের মুখেমুখে। কারণ এটিকে জনসংস্কৃতির অবিচ্ছিন্ন অংশ হিসেবে পরিণত করেছে সরকার।’
রিজভী আরও বলেন, যারা সত্যিকারের রণাঙ্গনের যোদ্ধা, বর্তমানে তাদেরকে অপমান করা হচ্ছে। আপনার (শেখ হাসিনা) স্বামীর বইটি কি আপনার কাছে নেই? সেই বইতে তিনি লিখেছেন, ‘আমি আর শেখ হাসিনা মালিবাগ থেকে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছি।’ তাহলে আপনি কাকে অনুসরণ করেন? আপনার চারপাশের চামচাদের?
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আপনি বলেছেন জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করেছে কি-না প্রমাণসাপেক্ষ ব্যাপার। ঐতিহাসিক সত্যের প্রমাণ লাগে না। আপনারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন কি-না, আপনার পরিবার মুক্তিযুদ্ধ করেছে কি-না, সেটা এখন প্রমাণসাপেক্ষ ব্যাপার। সত্যিকার অর্থে আপনারা মুক্তিযুদ্ধ চেয়েছিলেন কি-না? মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন কি-না, নাকি বৃহত্তর পাকিস্তানের ক্ষমতা পেয়েছিলেন, এটা এখন গবেষণার মূল বিষয়।’
সত্য কথা বললে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে চলে যায় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজী, কবি আল মাহমুদ তারা সব সময় সত্য কথা বলেছেন, দেশের পক্ষে বলেছেন। সত্য কথা, দেশের পক্ষে বললে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে যায়। সেইজন্যে এসব বরেণ্য ব্যক্তিদের এ সরকার স্বীকৃতি দেয়নি। যারা টিক্কা খানের চাকরি করেছে, কিন্তু জয় বাংলা স্লোগান দেয় তারা আওয়ামী লীগের কাছে, তাদের নেত্রীর কাছে প্রিয়।’
তিনি আরও বলেন, দেশ যে অন্ধকার অত্যাচারে নিমজ্জিত হয়েছে, তা থেকে মুক্তি পেতে হলে শুধু রাজনৈতিক দল নয়, পেশাজীবী সংগঠনসহ সবাইকে সংগ্রাম করতে হবে। এ অত্যাচারী সরকারের হাত থেকে মুক্তি না পেলে রুহুল আমিন গাজীর মতো বরেণ্য ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন চলতে থাকেবে।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, কবি আবদুল হাই শিকদার, লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।
নদী বন্দর / সিএফ