বগুড়ার শেরপুরে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রির পর এবার সেখানে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে দেদারছে বালু তোলায় ফসলি জমি, রাস্তা-ব্রিজ ও অসংখ্য বসতবাড়ি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারি গ্রামের ফসলি মাঠের অন্তত নয় বিঘা জমির মাটি কেটে বিক্রি করেন মাটি-বালু ব্যবসায়ী লাভলু মিয়া। সরকারি অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে মাটি-বালু বাণিজ্যের কারণে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবরিনা শারমিনের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে অভিযান চালান। এসময় ফসলি জমির মাটি না কাটতে তার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পঞ্চাশ হাজার টাকার জরিমানাও করা হয়।
ওইসব ফসলি জমির মাটি বিক্রির পর এখন বালু উত্তোলন শুরু করেছেন তিনি। অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে অনেকটা নির্বিঘ্নেই বালু উত্তোলন করে চলেছেন লাভলু মিয়া।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করার কারণে জমিগুলো পুকুরে পরিণত হয়েছে। এখন সেখানে দুইটি ড্রেজার বসানো হয়েছে। আর সে খনন যন্ত্রের মাধ্যমেই দিনে-রাতে সমান তালে বালু তোলা হচ্ছে।
এ সময় কথা হয় স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলী, সোলায়মান আলীসহ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে। তারা বলেন, ফসলি জমির প্রথমে মাটি কাটা হলো। এখন ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। ফলে জমির তলদেশ ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় আমাদের আশপাশের জমিগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া মাটি-বালু পরিবহনের কাজে ভারি যান (ড্রাম ট্রাক) চলাচলের কারণে সড়কের দুইটি ব্রিজও ভেঙে গেছে।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, সব মহলকে ম্যানেজ করেই ফসলি জমি থেকে মাটি-বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে জোর প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন লাভলু মিয়া। তাই ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না।
অভিযুক্ত লাভলু মিয়া প্রথমে বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু তার বক্তব্য জানতে চাইলে এড়িয়ে যান। এমনকি বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত নেই বলেও দাবি করেন। তবে যেসব ফসলি জমি থেকে বালু তোলা হচ্ছে সে সব জমি তার নিজের বলে স্বীকার করেন। কিন্তু ওইসব জমি থেকে কে বা কারা বালু তুলছেন সেটি তার জানা নেই বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, এ ধরণের কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।