ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ে নিজ দেশের সুপ্রিম কোর্ট ও ইলেক্টোরাল ভোটিং সিস্টেমকে রীতিমতো শত্রুতে পরিণত করেছেন ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো। এবার তিনি প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন, কেবল সৃষ্টিকর্তাই তাকে প্রেসিডেন্টের চেয়ার থেকে নামাতে পারে, আর কেউ নয়। অর্থাৎ, দেশটির সর্বোচ্চ আদালত, নির্বাচন কমিশন ও বিরোধীদের সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিলেন বিতর্কিত এ নেতা।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) ব্রাজিলের স্বাধীনতা দিবসে দেশজুড়ে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন বোলসোনারোর সমর্থক ও বিরোধীরা। তেমনই এক সমাবেশে রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় সমর্থকদের সামনে ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেন, আজ এখান থেকে আমরা ব্রাজিলের নতুন ইতিহাস শুরু করতে যাচ্ছি।
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, বোলসোনারোর জনপ্রিয়তা একেবারে তলানিতে নেমে গেছে। এর জেরে ২০২২ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে হারতে চলেছেন তিনি। এ অবস্থায় আসন্ন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং পদ্ধতি ব্যবহার নিয়ে জোর আপত্তি তুলেছেন এ নেতা। তার দাবি, এতে ব্যাপক জালিয়াতির সুযোগ রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে কোনো ধরনের প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
সমাবেশে বোলসোনারো বলেন, আমরা একটি পরিষ্কার গণতান্ত্রিক নির্বাচন চাই। সুপিরিয়র ইলেক্টোরাল ট্রাইব্যুনালের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রহসনের নির্বাচনে আমি অংশ নিতে পারি না। তিনি বলেন, কেবল সৃষ্টিকর্তাই আমাকে সরাতে পারেন। আমি কারাদণ্ডিত, মৃত অথবা শুধু বিজয়ী বেশেই বেরিয়ে আসবো।
সম্প্রতি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে সরকারের ভেতর থেকে পরিকল্পিতভাবে ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। এ নিয়ে দেশটির সুপ্রিম কোর্টকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন জেইর বোলসোনারো।
তাছাড়া, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগে সিনেটেও তদন্তের মুখে রয়েছেন এ নেতা। বিশ্বের মধ্যে করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছে ব্রাজিল। এ মহামারিতে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে ৫ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এরপরও শুরু থেকেই করোনার বিষয়টিতে হেলাফেলা করতে দেখা গেছে বোলসোনারোকে।
সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি
নদী বন্দর / এমকে