করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এবার নির্ধারিত তারিখে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে হচ্ছে না তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা। এ বছর পরবর্তী সময়ে ইজতেমা হবে কি-না, জানুয়ারি পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি দেখে সে বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি উন্নতি সাপেক্ষে তাবলিগের দুই গ্রুপ ফেব্রুয়ারির শেষ কিংবা মার্চের শুরুর দিকে বিশ্ব ইজতেমা করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে। ২০২১ সালে প্রথম পর্ব হবে ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্বে ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি ইজতেমা হওয়ার কথা ছিল।
বিশ্ব ইজতেমার বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘জানুয়ারি পর্যন্ত কোভিড পরিস্থিতি আমরা দেখব অবস্থাটা কী হয়, এরপর চিন্তা করব। অবস্থার উন্নতি হলে তখন হয়তো সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটা তারিখ ফেলব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এত বড় একটা কাজ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন আসে। যদিও দুটি গ্রুপ আছে, গ্রুপ থাকলেও আমরা ভাগ করে দিয়েছি। চলতি বছর দুই ভাগে করেছি, প্রয়োজনে এবারও আমরা দুইভাবে করব।’
ইজতেমার বিষয়ে তাবলিগের লোকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘গত বছর আমরা হজে যাইনি, এবারও সম্ভাবনা নেই। তারপরও আমরা কিন্তু প্রস্তুতি নিয়ে আছি। অন্তত ২০ থেকে ২৫ হাজার লোকের হজের কাগজপত্র ঠিকঠাক করে রাখছি। যদি বলা হয় ক্ষুদ্র আকারে হজ হবে ৫ হাজার লোক পাঠাতে পারব, আমরাও সেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।’
তাবলিগের লোকজন বলেছেন, ফেব্রুয়ারির শেষে কিংবা মার্চের শুরুতে তারা ইজতেমা করতে চান— এ বিষয়ে ফরিদুল হক বলেন, ‘হতে পারে হয়তো, অবস্থা যদি ভালো থাকে। তবে কোভিড পরিস্থিতির অবনতি হলে কোনো অবস্থাই হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ব ইজতেমা হোক। আল্লাহ যদি পরিস্থিতি ভালো রাখেন, আমরা ইনশাআল্লাহ ইজতেমা করব। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ইজতেমা করার কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’
তাবলিগের মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলামের গ্রুপের সাথী তৌহিদুল হক সোহেল বলেন, ‘ইজতেমার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। বিশ্ব ইজতেমা শুধু বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে হবে না, অন্যান্য দেশ থেকে লোকজন আসলেই তখন সেটা বিশ্ব ইজতেমা হবে। অন্যান্য দেশগুলো থেকে লোকজন আসতে পারে, এমন একটা পরিস্থিতি হলে যাতে ইজতেমাটা যাতে হয় আমরা সেই বিষয়ে সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছি। সরকার যেভাবে ভালো মনে করে সেভাবেই করবে।’
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারই ইজতেমার তারিখ ঠিক করে দিক। আমরা স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দফতরে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি।’
তাবলিগ জামাতের সদস্য মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘পরিস্থিতি ভালো হলে আমরা ফেব্রুয়ারির শেষে কিংবা মার্চের শুরুতে ইজতেমা করতে চাই। সরকারকে এ বিষয়ে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি।’
নদী বন্দর / পিকে