ট্রাকচালকদের ৭২ ঘণ্টা কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেনাপোল থেকে সবধরনের পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে বন্দর এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। তবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি ট্রাক বন্দর থেকে পণ্য লোড করেছে। কিন্তু গন্তব্যে যেতে না পারায় বন্দর এলাকায় আটকা পড়েছেন ট্রাকচালকরা। কর্মবিরতির সমর্থনে মাইকিং চলছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
বন্দর শ্রমিকরা বলেন, তারা বন্দরে কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু কর্মবিরতিতে বন্দর থেকে আমদানি পণ্য খালাস না হওয়ায় তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। দ্রæত কর্মবিরতি প্রত্যাহার চান এসব শ্রমিক।
বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, শিল্প-কলকারখানার কাঁচামাল, গার্মেন্টস ও খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়ে থাকে। কিন্তু পরিবহন কর্মবিরতির কারণে ট্রাকচালকেরা এসব পণ্য নিয়ে গন্তব্যে যেতে পারছেন না। এতে বন্দর এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাধিক ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, পণ্য লোড না হওয়ায় বন্দর এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে পণ্যজটের। ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। একদিকে রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক জায়গা না থাকায় দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার ওপর। অন্যদিকে আমদানি পণ্য ঢুকছে। সব মিলিয়ে বন্দর এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক যানজটের। চলাচলে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল জানান, কর্মবিরতিতে বেনাপোল বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও বন্দরের কার্যক্রম সচল রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সচল রয়েছে। এছাড়া পাসপোর্টধারী যাত্রীরা দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করছেন। তবে ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহন করতে না পারায় বাণিজ্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এ কে এম আতিকুজ্জামান সনি ও সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দীন গাজী জানান, কর্মবিরতিকে সমর্থন জানিয়ে বেনাপোল বন্দর এলাকায় লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্দ রাখা হয়েছে। কর্মবিরতির প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে কোনো ট্রাক বেনাপোল বন্দর থেকে পণ্য লোড করেনি বা বেনাপোল ছেড়ে যায়নি।
বেনাপোল ট্রান্সপোট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী জানান, কর্মবিরতি পালন করায় বন্দর থেকে কোন ট্রাক পণ্য লোড করবে না বা বেনাপোল থেকে কোন ট্রাক ছেড়ে যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৫ দফা দাবি আদায়ে কর্মবিরতির ডাক দেন বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান, প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্রাক চালক শ্রমিক ফেডারেশন। এর সঙ্গে একাতত্মতা ঘোষণা করেন যশোর জেলা ট্রাক মালিক সমিতি, বেনাপোল ট্রাক মালিক সমিতি ও ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি।