1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
পাটের ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চুয়াডাঙ্গার চাষিরা - Nadibandar.com
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৩৭ বার পঠিত

চুয়াডাঙ্গা জেলায় মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাট জাগ দিতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল পাট চাষিদের। পরবর্তীতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় সেই সমস্যা কেটে গেছে। ঠিকমতো পাট কেটে জাগ দিয়ে আঁশ ছাড়িয়ে শুকিয়ে সেই পাট এখন বাজারে বিক্রির ধুম পড়েছে।

অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর পাটের ফলনও যথেষ্ট ভালো হয়েছে। বর্তমানে সব সমস্যা সমাধান করে বাজারে নতুন পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এতে বেশ আনন্দিত চাষিরা। এতে দীর্ঘদিন পর হাসি ফিরেছে সোনালি আঁশে।

কৃষকরা এখন পাট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোথাও খাল-বিল, পুকুর কিংবা ডোবায় পাট কেটে জাগ দেয়ার জন্য ডুবিয়ে রাখা হয়েছে। আবার হাইওয়ে কিংবা গ্রামীণ রাস্তার পাশে বাঁশের খুঁটি পুঁতে তাতে সারি সারি করে শুকাতে দেয়া হয়েছে পাট। কোথাও বা পাটগাছ কেটে জাগ দিয়ে সেখান থেকে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত। আবার কেউ কেউ আঁশ ছাড়ানো পাট শুকিয়ে ঘরে তুলছেন। গ্রামাঞ্চলে এখন একটাই দৃশ্য চোখে পড়ে সোনালি পাট নিয়ে ব্যস্ত কৃষকরা।

 

অনেক জায়গায় সড়কের দুই পাশে নারী ও পুরুষকে পাট শুকানোর কাজ করতেও দেখা যায়। আবার অনেকে অটোরিকশা, ভ্যানে করে বাজারে পাট নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে নতুন পাটের গন্ধে এখন গ্রামগঞ্জ মাতোয়ারা।

গত কয়েক বছর ধরেই পাটের দাম খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। এরমধ্যে হঠাৎ করে গত বছর পাটের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। পাট কাটা মৌসুমের শুরুতেই প্রতিমণ পাট বিক্রি হয় ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে। পরে এটি ৩৫০০ এবং মৌসুমের শেষ পর্যায়ে হাটে প্রতিমণ পাটের দাম ৫ হাজার টাকা পৌঁছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, গত বছর প্রতিমণ পাটের গড় মূল্য হয়েছিল ৩৫০০ টাকা।

 

পাট চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাট চাষ করে তিন মাসের মধ্যে পাট ঘরে তোলা যায়। কম সময়ে, কম পরিশ্রমের ফসল পাট। প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ১০-১২ মণ পাট উৎপাদন হয়।

এবার বাজারে পাটের মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত। এত দামে বিক্রির কারণে পাট চাষের খরচ বাদ দিলে অভাবনীয় মুনাফা পাচ্ছেন পাট চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ২০ হাজার ৫২৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ দশমিক ৬ টন। এ হিসেবে জেলায় এবার ৭৩ হাজার ৮৯৭ টন পাট উৎপাদন হবে। বর্তমানে পাট কাটা ধোয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন হাট বাজারে পুরোদমে পাট বেচা-কেনা চলছে। এ বছর পাটের রং ভালো হওয়ায় যে কোনো বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি।

 

জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পাট নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য। প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত। পাটের দাম শুরুতেই ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

জীবননগর উপজেলার নিধিকুন্ড গ্রামের পাট চাষি মিজানুর রহমান জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। ২ বিঘা জমিতে প্রায় ২৪ মণ পাট হয়েছে। তিনি সেই পাট বাজারে নিয়ে প্রতিমণ ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এতে তার অনেক লাভ হয়েছে। কম খরচে, কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় খুব খুশি তিনি।

 

দামুড়হুদা উপজেলার বলদিয়া গ্রামের পাট চাষি আবুল হাসান জানান, সোয়া ২ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ওই জমিতে ১৮ মণ পাট হয়েছে। প্রতিমণ ২ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এতে তার খরচ বাদে ৩৭ হাজার ২০০ টাকা লাভ হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল মাজেদ বলেন, এবার পাটের ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা বর্তমান পাটের বাজার দর অনুযায়ী উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভ পাচ্ছেন। পাটের দাম এ রকম থাকলে আগামী বছর কৃষকরা আরও ব্যাপকভাবে পাট চাষে উদ্বুদ্ধ হবেন।

নদী বন্দর / সিএফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com