1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
মুন্সিগঞ্জে শাপলা এখন বিকল্প আয়ের উৎস - Nadibandar.com
সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩১ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ২৮৩ বার পঠিত

নদী বেষ্টিত মুন্সিগঞ্জের বিল, ঝিল আর জলাভূমিতে এখন প্রাকৃতিকভাবে ফোটা শাপলার সমারোহ। ফুল প্রজাতির হলেও সবজি হিসাবে সুস্বাদু শাপলা। বাজারে চাহিদা থাকায় নয়নজুড়ানো শাপলা তুলে বিক্রি এখন বিকল্প আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে শত শত কর্মহীন কৃষকের। প্রাকৃতিকভাবে হওয়ায় উৎপাদনে প্রয়োজন নেই পুঁজির। বিনা পুঁজিতেই শাপলা আহরণ ও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান তারা। বিভিন্ন বয়সী মানুষ ঝুঁকছেন এ কাজে। শাপলা তুলে বিক্রি করে চলছে সংসার।

জানা যায়, জেলার টঙ্গীবাড়ী, সিরাজদিখানের জলাভূমি ও শ্রীনগরের আড়িয়াল বিল থেকে প্রতিদিন শত শত নৌকায় শাপলা আহরণ চলছে। ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে শাপলা তোলার কাজ। একেক জন প্রতিদিন ১০০-২০০ আটি পর্যন্ত শাপলা তুলে থাকেন। পাইকারি প্রতি আটি শাপলা বিক্রি করছেন ৩-৫ টাকা।

স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি অধিকাংশ শাপলা বিক্রি হয় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারে। দিনভর জলাভূমিতে থেকে আহরণের পর শাপলা রাখা হয় রাস্তার পাশে। বিকেলে ট্রাক-পিকআপ যোগে পাইকাররা এসব শাপলা নিয়ে যান ঢাকার বাজারগুলোয়। পাশের জেলা ও টাটকা থাকায় ঢাকার বাজারগুলোয় মুন্সিগঞ্জের শাপলার বেশ চাহিদা।

 

আড়িয়াল বিলের আলমপুর এলাকায় দেখা যায়, বিলের দিগন্তজুড়ে ফুটে আছে অসংখ্য শাপলা। সারি সারি নৌকায় ভোর থেকে বিলের জলে ফোটা শাপলা তুলছেন কৃষকরা। শাপলা ধুয়ে নির্দিষ্ট আকৃতিতে কেটে রাখছেন। ১৩-১৪টি শাপলা করে আটি বেঁধে রাখছেন নৌকায়। প্রতিটি নৌকায় ফুলে ফুলে ভর্তি।

শাপলা তোলায় ব্যস্ত ফরিদ শেখ বলেন, ‘উন্নাকালে জমিতে কাজ করি। এখন বর্ষার পানিতে জমিজমা সব তলাই গেছে। জমির কোনো কাজ নাই। তাই উপার্জন করতে শাপলা তুলি। ১০০-১৫০ আটি শাপলা তুলতে পারি প্রতিদিন। বিক্রি কইরা ৫০০-৭০০ টাকা আয় হয়। এই দিয়ে সংসার চলে যাচ্ছে।’

 

সনাতন মন্ডল বলেন, ‘শ্রাবণ থেকে চলতি আশ্বিন মাস পর্যন্ত বিলে শাপলা ফোটে। কোনো পুঁজির দরকার হয় না। শাপলা তুলতে একটু পরিশ্রম হয় আর কি। সারাদিন শাপলা তুলে বিলের পাশে রাস্তায় রাখি। পরে বিকালে পাইকাররা ট্রাক দিয়ে নিয়া যায়। এখন ৩ টাকা দেয়। অবার চাহিদা বেশি থাকলে ৫ টাকাও দেয়। ট্রাকে উঠানোর পর আমাদের টাকা দিলে বাসায় চলে যাই। আর পরদিন সকালে আসি।’

শাহজাহান বলেন, ‘প্রতিদিন শত শত নৌকায় শাপলা তোলে। এ মাস (আশ্বিন) পর্যন্ত তোলা যাবে। আল্লাহর রহমতে এই কাজে সবার ভালোই চলছে। আমরা কৃষক মানুষ, অন্য তো কামকাজ নাই।’

 

সিরাজদিখানের আকরাম আলী বলেন, ‘ঢাকার মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন বাজারে যেসব শাপলা বিক্রি হয়, তার বেশিরভাগই মুন্সিগঞ্জ থেকে যায়। শুধু সিরাজদিখান থেকে প্রতিদিন ১-২ ট্রাক শাপলা ঢাকায় যায়।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খুরশীদ আলম বলেন, ‘শাপলা চাষ করতে হয় না। প্রাকৃতিকভাবে মুন্সিগঞ্জে প্রচুর শাপলা হয়ে থাকে। পুষ্টির চাহিদা পূরণে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে শাপলা। যেহেতু বাজারে খাদ্য হিসেবে চাহিদা আছে। তাই শাপলা তুলে বিক্রি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু প্রাকৃতিক পরিবেশে শাপলা জন্মায়, সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়ানোর জন্য বাজারজাত করার আগে ভালোভাবে পরিষ্কার করার পরার্মশ দিচ্ছি।’

নদী বন্দর / পিকে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com