চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে চারজনের মরদেহ। পুলিশ বলছে এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আটজন। তবে চেয়ারম্যান বলছেন এখনো ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নিখোঁজদের উদ্ধারে পুনরায় অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে শিবগঞ্জের বোগলাউড়ি ঘাট থেকে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের দশ রশিয়া যাওয়ার পথে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
নৌকায় থাকা বেগুন ব্যবসায়ী আব্দুল করিম জানান, ৩৪-৪০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা বোগলাউড়ি থেকে বিশরশিয়ার দিকে যাচ্ছিল। লক্ষ্মীপুর চরের সামনে পৌঁছালে তীব্র স্রোত আর ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি। তখন তারা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এর একটুপরই আরও একটি ঢেউ এসে আমাদের নৌকা উল্টে যায়। এসময় আমি চোখ খুলেই দেখি চারদিকে মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কাকে ধরবো, কাকে বাঁচাবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এমন সময় দেখি দেড় বছরের একটা বাচ্চা পটলের বস্তার ওপর অঝোরে কাঁদছে। তাড়াতাড়ি গিয়ে বাচ্চাটাকে উদ্ধার করে নৌকায় পৌঁছে দেই। তারপর পেছনে ঘুরেই ওই বাচ্চার মাকে দেখতে পাই। সে ভয়ে বারবার বলছে, আমি মরে গেলেও যেন বাচ্চাটা বেঁচে যায়। এরপরই দেখি একজন আমাদের নৌকায় উঠতে বলছেন। আমরা নৌকায় উঠলাম কিন্তু অন্য সবাই কোথায় এ কথা যেন মনেই ছিল না। আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে গেছিলাম।’
পাঁকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, রাতে সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী নৌকাডুবির ঘটনায় ৩৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। চারজন মারা গেছেন। এখনো অভিযান অব্যহত রয়েছে।
উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের সাব-স্টেশন কর্মকর্তা সিরাজ উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান কর্যক্রম চলছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত নতুন করে কারও সন্ধান মেলেনি। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আটজন।
নদী বন্দর / সিএফ