সাতক্ষীরায় সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা জেলায় সর্বমোট ৫৮১টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরিসহ প্রতিমার সৌন্দর্য্য বর্ধনে ভাস্করা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আগামী সোমবার (১১ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ পূজা মন্ডপে দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণভাবে সাজাতে মন্দিরগুলোতে দিনরাত চলছে ব্যাপক প্রস্ততি চলছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রসুলপুর, আলিপুর, ভোমরা, কাথন্দা, ছয়ঘোরিয়া, সোনাবাড়িয়া, ঝিটকি, ধুলিহর, নলতা, দেবহাটা, বাকা, বুধহাটার অধিকাংশ মন্দিরে দুর্গার আগমন উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি আছে রং তুলির আঁচড় লাগানোর কাজ।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল সার্বজনীন পূজা মন্ডপের সভাপতি শম্ভু কুমার দে বলেন, আমাদের পূজা মন্ডপে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্যাংদহ গ্রামের মৃৎ শিল্পি মধু দাস ও মৃত্যুঞ্জয় দাশ প্রতীমা তৈরির কাজ করছেন । তারা বলেন, বংশ পরম্পরায় তারা এ পেশায় জড়িত আছেন । তারা তাদের বাবা, দাদাদের কাছে থেকেই কাঁদা, মাটি আর খড় দিয়ে প্রতীমা তৈরি করার কাজ শেখেন। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রতীমা তৈরির কাজ শেষ হবে বলেও তারা জানান।
অন্য দিকে. ঝিটকি এলাকার ভাস্কর অজয় পাল বলেন, বছরের সব সময় কাজ থাকে না, অধিকাংশ সময় বেকার বসে থাকতে হয়। এখন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে কাজের চাপ বেশি। তাই রাত দিন পরিশ্রম করে মনের মাধুরী মিশিয়ে মা দুর্গার প্রতীমা তৈরি করছি। আজ থেকে প্রতিমায়
রং লাগানো হবে। কাঠ, সুতা, খড়, রং, কাপড় ও মুকুট দিয়ে এক সেট প্রতীমা তৈরি করতে প্রায় ৮ থেকে ১০ দিন সময় লাগে ।
সাতক্ষীর জেলা মন্দির কমিটির সভাপতি বিশ্ব নাথ ঘোষ বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। আমি বিশ্বাস করি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে যে মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে তারা আন্তরিকভাবে কাজ করলে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
এবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়িতে ০৯টি, লাবসায় ০৬টি, বল্লীতে ০৫টি, ঝাউডাঙ্গায় ১৮টি, আগড়দাড়িতে ১৩টি, ধুলিহরে ০৩টি, ব্রহ্মরাজপুরে ০৪টি, ভোমরায় ০৩টি, শিবপুরে ০৯টি, ঘোনায় ০৬টি, বাঁশদাহে ০৪টি, কুশখালিতে ০৩টি ও বৈকারিতে ০৩টি।
তালা উপজেলার ধানদিয়ায় ১৭টি, নগরঘাটায় ০৯টি, সরুলিয়ায় ১০টি, কুমিরায় ১৩টি, খলিষখালীতে ১৯টি, তেতুলিয়ায় ০৮টি, তালা সদরে ১৯টি, ইসলামকাটিতে ২০টি, মাগুরায় ১০টি, খলিলনগরে ২০টি, খেশরায় ১৪টি, জালালপুরে ১৬টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ চলছে।
শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তার বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হুসেন বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে তাদের উৎসব পালন করতে পারে সে বিষয়ে আমরা সকল ধরনের প্রন্তুতি সম্পন্ন করেছি। যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি। এছাড়াও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় থাকবে বলে তিনি জানান।
নদী বন্দর / এমকে