ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার এনামুল হক এনু এবং রূপন ভূইয়া ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন তাদের আপন চাচা আমিনুল হক ভূইয়া। এসময় তিনি তাদের মুক্তি দাবি করেন।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন আমিনুল হক। এসময় এনু-রূপনের শিক্ষক মুন্তাজুল হক মানোয়ারসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
আমিনুল হক ভূইয়া বলেন, আমরা পুরান ঢাকার লালমোহন সাহা স্ট্রিটের স্থায়ী বাসিন্দা। আমার দুই ভাতিজা এনামুল হক এনু ও রূপন স্টিল সিট আমদানিকারক এবং ব্যবসায়ী। তারা বর্তমানে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি যড়যন্ত্রমূলকভাবে সাজানো মামলায় তাদের আটক করা হয়।
এসময় এনু ও রূপন ভূইয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত করে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়। প্রকৃত সত্য হলো ওই ক্যাসিনোকাণ্ডের সঙ্গে এনু ও রূপনের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ২০১৮-১৯ সালের কমিটিতে দুই ভাইয়ের কেউ ছিলেন না। ক্লাব কমিটির সদস্য না হয়ে কীভাবে কাসিনোকাণ্ডে জড়িত হতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়।
এনু-রূপনকে বড় ব্যবসায়ী উল্লেখ করে তাদের চাচা বলেন, বড় মাপের ব্যবসায়ী হয়ে কেন তারা ক্যাসিনোতে জড়িত হবে। দুজনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এনু-রূপন স্টিল হাউজ এদেশের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান ২০১১ সাল থেকে ২০১৯-২০ সাল পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে প্রায় ৫১৮ কোটি টাকার পণ্য আমদানি করেছে। পণ্য আমদানির সময় সোনালী ব্যাংক কাস্টম হাউজ শাখায় ২০০ কোটি টাকা ট্যাক্স ৩৫ শতাংশ হারে প্রদান করেছে। এছাড়াও ৩ শতাংশ হারে এআইটি প্রদান করেছে ৩ কোটি টাকারও বেশি। ডাচ বাংলা ব্যাংক নয়াবাজার শাখায় প্রতিটি এলসির সময় এলটি প্রদান করতেন। ২০১১-১৯ সাল পর্যন্ত ২৫৫ কোটি টাকার বিক্রয়ের পর তা পরিশোধ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি আমার দুই ভাতিজা এনু-রূপনকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে ১১টি সাজানো মামলা দায়ের করে, যা ভিত্তিহীন।
এনু-রূপনের বাড়িতে কোটি কোটি টাকা পাওয়ার বিষয়ে আমিনুল হক ভূইয়া বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে সিন্দুকের ভেতর যে ২৬ কোটি ৫৪ লাখ ৬০০ টাকা, ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআর এবং ১২৩০ গ্রাম স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা আটক করা হয়েছে সেগুলো সবই বৈধ।
নিজ বাড়িতে এতো টাকা রাখা নিয়ে প্রশ্নের তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো এনু-রূপনকে গ্রেফতারের পর তাদের ব্যাংক একাউন্ড ফ্রিজ করে দেওয়া হয়। ফলে বাধ্য হয়ে স্টিল বিক্রির টাকা ঘরেই রাখতে হয়েছে তাদের। এছাড়া আর কোথাও টাকা রাখার ব্যবস্থা ছিল না। আমি হলফ করে বলতে পারি আমার ভাতিজারা বৈধভাবে ব্যবসা করে আয়-রোজগার করেছে। সরকারকে নিয়মিত ট্যাক্স দিয়েছে। ইতোমধ্যে ২০১১-১৯ সাল পর্যন্ত মাত্র আট বছরে সরকারকে এক হাজার ৬শ’ কোটি টাকার ট্যাক্স দিয়েছে।
নদী বন্দর / এমকে