পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে বদলে যাচ্ছে সব কিছু। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে মানুষ। মানুষের চলার এই গতি ধারায় গ্রামীণ অর্থনীতিও পাল্ট যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বদল হচ্ছে মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহের পদ্ধতি। পরিবর্তনশীল এই যুগে কৃষি খাতের নতুন-নতুন উদ্ভাবন এবং আধুনিকায়নে কৃষকরা ঝুঁকছেন আধুনিক কৃষি বিপ্লবের দিকে।
এতে পরিত্যক্ত জমিও আসছে কৃষির আওতায়, স্বল্প শ্রম ও অল্প পুঁজিতে ফসলের আশাতীত ফলনের কৃষি খাতগুলো গ্রামীণ অর্থনীতিকে করে তুলেছে সমৃদ্ধ। সমৃদ্ধশীল কৃষি উন্নয়নের ঝালকাঠির রাজাপুরে সবজি উৎপাদন, পোল্ট্রি ও মাল্টার সফলতার পর এবার বিদেশি ফল ড্রাগন বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের আবাদ শুরু হয়েছে।
প্রান্তিক চাষিদের ভাগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে অপার সম্ভাবনাময় অর্থনীতির কৃষি খাত অন্যান্য অর্থ উর্পাজনশীল খাতগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন চাষি আনিসুর রহমান। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের সাংগর গ্রামের একমাত্র চাষি আনিসুর রহমান ২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেছেন। তিনি আট মাস আগে এক হাজার ও দেড়মাস আগে এক হাজার পাচঁশত চারা রোপণ করেছে। বর্তমানে দুই হাজার পাচঁশত ড্রাগন চারা রোপণ করা হয়েছে।
রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের সাংঙ্গর গ্রামের প্রান্তিক চাষি আনিসুর রহমান (৩৫) সাথে কথা বলে জানা যায়, তার পরিত্যক্ত ২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেন, এখন কিছু গাছে ফল আসা শুরু করছে। হয়তো আগামী বছরে পরিপূর্ণ ফল পাবে বলে আশা করছেন।
মাটি, আবহাওয়া ড্রাগন চাষের অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন। নানা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকায় এই ফলের ব্যাপক কদর থাকায় তিনি সরকারি কোনো অনুদান পেলে নতুন করে আরও বেশি জমিতে ড্রাগনের আবাদ বাড়াবেন বলে জানান।
রাজাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান মনির জানান, রাজাপুর উপজেলায় এখনও অনেক অনাবাদী জমি রয়েছে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে অকৃষি জমিগুলো ড্রাগন চাষের আওতায় এনে কৃষকদের ড্রাগন চাষে উৎসাহিত করলে গ্রামীণ অর্থনীতি হয়ে উঠবে শক্তিশালী। বেকার জনগোষ্ঠীর বেকারত্ব দূর হয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে গ্রামীণ জনপদে।
রাজাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রিয়াজ উল্লাহ বাহাদুর বলেন, উপজেলায় ২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেছে নতুন অর্থ বছরে ড্রাগন চাষ লক্ষ মাত্রার চেয়েও বেশি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিকর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, রাজাপুর উপজেলার মাটি ফল চাষাবাদের জন্যে অধিক উপযোগী থাকায় এখানকার কৃষকরা নতুন-নতুন ফলের আবাদ করছে। মাল্টার সফলতার পর এবার তারা ড্রাগন চাষেও সফলতা বয়ে আনছে।
এতে বিশাল জনগোষ্ঠির পুষ্টি ঘাটতি কমে আসবে, অর্থনীতিও হয়ে উঠবে শক্তিশালী, কৃষকরা যাতে ড্রাগন ফল আরও বেশি করে চাষ করতে পারে তার জন্যে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। এর মধ্য দিয়েই রাজাপুর উপজেলার ড্রাগন বিদেশেও রপ্তানি করে অর্থ আয় করা সম্ভব বলেও মত দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
নদী বন্দর / বিএফ