২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ডিএমপির ৩৪তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া মোহা. শফিকুল ইসলাম অবসরে যাওয়ার কথা আগামী ৩০ অক্টোবর। সে হিসেবে তিনি রাজধানীর পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে আছেন আর মাত্র ১৭ দিন। এ অবস্থায় কে হচ্ছেন তার স্থলাভিষিক্ত- তা নিয়ে এরই মধ্যে শীর্ষ মহলে চলছে আলোচনা। তবে ডিএমপি কমিশনার হিসেবে আরও এক বছরের জন্য মোহা. শফিকুল ইসলামকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
কিছুদিনের মধ্যেই নতুন কমিশনার নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত নথিপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এক বছরের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে বুধবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় আমাকে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এক বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলেছেন। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে আরও এক বছরের জন্য মোহা. শফিকুল ইসলামকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। আগামী ৩০ অক্টোবর চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে মোহা. শফিকুল ইসলামের। এ কারণে কয়েক দিন ধরেই নতুন কমিশনার কে হতে পারেন তা নিয়ে আলোচনা চলছে পুলিশ বাহিনীতে।
ডিএমপি সূত্র জানায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বর্তমান কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অষ্টম ব্যাচের এই কর্মকর্তা ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর এএসপি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায়। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে তিনি নারায়ণগঞ্জ, পটুয়াখালী, সুনামগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রামের রেঞ্জ ডিআইজি ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর তিনি অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এইচআরএম শাখার প্রধান ও সিআইডি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান কমিশনারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে থেকেই নতুন কমিশনার হওয়ার জন্য একাধিক কর্মকর্তা তদবির করছিলেন।
কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কাকে রেখে কাকে কমিশনার পদে পদায়িত করবেন তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। তুলনামূলক ঊর্ধ্বতন ব্যাচের কর্মকর্তাদের রেখে নিচের ব্যাচের কোনও কর্মকর্তাকে কমিশনার পদে পদায়িত করা হলে বাহিনীতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও আলোচনা চলছে। এ কারণে বর্তমান কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া অথবা ১২তম ব্যাচের কাউকে এই পদে পদায়িত করা হতে পারে।
এদিকে, ডিএমপির ৩৫তম কমিশনার হওয়ার আলোচনায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে নৌ-পুলিশের প্রধান হিসেবে কর্মরত।
ডিএমপি কমিশনার হওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ছিলেন পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি এস এম রুহুল আমিন। এছাড়া পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এম খুরশীদ হোসেন এবং ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের নামও আলোচনায় ছিল।
নদী বন্দর / এমকে