1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চক্রান্তে সরকার: ফখরুল - Nadibandar.com
রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৯ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১
  • ১১৪ বার পঠিত

সরকারের পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক উসকানি ও এর ফলশ্রুতিতে দেশব্যাপী রক্তাক্ত হিংসাশ্রয়ী ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, পবিত্র কোরআন অবমাননা, পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে নিরাপত্তা বিধান না করে হামলা-ভাঙচুর-সংঘাত ও সংঘর্ষকে উস্কে দিয়ে দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে, সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের জীবন কেড়ে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চক্রান্তে মেতে উঠেছে সরকার।

রোববার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে গণধিকৃত সরকার সাম্প্রদায়িক সংঘাতের উপকরণ ছড়িয়ে সহিংস রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে উদ্ধারকর্তার ভূমিকায় অভিনয় করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুদৃষ্টি পেতে চায়। কিন্তু বর্তমান যুগে কিছুই ঢেকে রাখা যায় না। অবগুণ্ঠন উন্মোচিত হয়ে সত্য প্রকাশ পাবেই। কুমিল্লার ঘটনার রেশ ধরে সারাদেশে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে তা যে সরকারের ন্যাক্কারজনক পরিকল্পিত নীলনকশা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেটি আজ জনগণের কাছে স্পষ্ট।

তিনি বলেন, গণবিরোধী নীতির কারণে সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় দেশে নৈরাজ্য ভয়ালরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশের মানুষ এখন জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে ভীতি ও শঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। ঠিক এই মুহূর্তে সরকার নানা ‘বায়েস্কোপ’ প্রদর্শন করে তাদের অমানবিকতার বলি করছে দেশের জনগোষ্ঠীর নানা সম্প্রদায়ের মানুষদের।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরঞ্জিত শক্তি প্রয়োগের কারণে প্রাণহানি ও গুরুতর আহতসহ দেশের বিভিন্ন জনপদ রক্তরঞ্জিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বহীনতা এবং তাদের নির্বিকার ভূমিকার কারণেই বিভিন্ন এলাকার মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।

তিনি বলেন, কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে চাঁদপুরের হজিগঞ্জ, নোয়াখালীর চৌমুহনী, ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, হামলাচেষ্টাসহ নানাবিধ সংঘাত-সংঘর্ষ ও পুলিশি আক্রমণে বিক্ষুব্ধ মানুষের ওপর লাঠিপেটা, গুলি, টিয়ারসেল ও সাউন্ডগ্রেনেড নিক্ষেপ এবং বেধড়ক গ্রেফতারসহ বর্বরোচিত আক্রমণে হতাহতের ঘটনা শুধু নির্দয় আচরণই নয়, এটি কাপুরুষোচিত। এই অরাজকতা সৃষ্টিকারীরা বাংলাদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান ঐতিহ্যকে ম্লান করলো।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের উপসনালয় ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে কক্সবাজারের রামু-উখিয়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, বি-বাড়িয়া, ফরিদপুর, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে আক্রমণ ও লুটপাট চালানো হয়েছে। তাদের ঘর-বাড়ি, সহায়-সম্পত্তি আত্মসাত করা হয়েছে। এই দুস্কৃতিকারীরা প্রায় সকলেই ক্ষমতাসীনদলের লোক।

মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্গাপূজার প্রাক্কালে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আশ্বাস দেওয়ার পরও কেন পবিত্র কোরআর অবমাননা, মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটলো। কুমিল্লার সাধারণ মানুষের মতো আমরাও একমত যে, পুলিশবাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা নিলে নানুয়া দীঘীর পাড়ের মণ্ডপের ঘটনাটি নির্মম অমানবিকতার দিকে গড়াতো না।

তিনি বলেন, এখন একটি প্রশ্ন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, কে বা কারা পবিত্র কোরআন শরীফ পূজামণ্ডবে নিয়ে গেছে? সরকারের নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাসের পর কেবলমাত্র ক্ষমতা-সংশ্লিষ্ট দুষ্টুচক্র ছাড়া দেশের জনগোষ্ঠীর কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ই এই কদর্য কাজ করবে না বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমি এই ঘটনা জানার পরপরই একটি বিবৃতিতে বলেছিলাম। সরকারের মদদেই কুমিল্লার নানুয়ার দীঘীর পাড়ের পূজামণ্ডপে চক্রান্তমূলক কুৎসিত কাজটি করা হয়েছে। এর বড় প্রমান ঘটনার পরপরই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা অতিসত্তর পূজামণ্ডপ ও মন্দিরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঠানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এই অনুরোধে সাড়া না দিয়ে পুলিশ পাঠিয়েছে অনেক পরে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের নীতি আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আজ একটি দৈনিক পত্রিকায় ‘জড়িতদের চিহ্নিত করার পথে গোয়েন্দারা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনটির এক স্থানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক, সাবেক ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানকে জড়িয়ে কল্পিত ‘স্টোরি’ রচনা করা হয়েছে। আমান উল্লাহ আমান ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ড বিএনপির একজন নেতার সঙ্গে ফোনালাপের ফাঁস হয়েছে বলে একটি অডিও কল ভাইরাল করা হয়েছে। সরকার এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। কণ্ঠ কাটপিস করে সুপার এডিটিংয়ের মাধ্যমে বানোয়াট ফোনালাপ ইতোমধ্যে অসংখ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্ট্য ব্যক্তিদের নামে ভাইরাল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের মদদে একটি অসাধু মহল প্রতিনিয়ত এই হীন কাজগুলো সর্বক্ষণ করে যাচ্ছে। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কটুক্তি করায় গাজীপুর সিটি করপোারেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের শোকজ করা হয়েছে মর্মে বৈশাখী টেলিভিশনের জয়দেব দাস প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এই প্রযুক্তির যুগে কণ্ঠের শব্দ ভেঙে-ভেঙে নানা কিছু করা যায়। তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কথায় এটা প্রমানিত যে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে যে ফোনালাপ ভাইরাল করা হয় সেটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। আমান উল্লাহ আমানের ফোনালাপটি ভুয়া, বানোয়াট, অসত্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সুপার এডিটেড। আমি এই চক্রান্তমূলক ফোনালাপ ভাইরালের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

নদী বন্দর / পিকে

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com