মিয়ানমারে গত বুধবার (৩ নভেম্বর) ও বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) গণতন্ত্রকামী বেসামরিক যোদ্ধাদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ে শতাধিক জান্তা সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। মারা গেছেন বেশ কয়েকজন প্রতিরোধযোদ্ধাও। শুক্রবার (৫ নভেম্বর) মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি স্থানীয় বেশ কয়েকটি প্রতিরোধগোষ্ঠীর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারজুড়ে জান্তা নিয়ন্ত্রিত বাহিনীর ওপর আক্রমণ বাড়িয়েছে অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়, ম্যাগওয়ে, সাগাইংয়ের মতো শহরগুলোর পাশাপাশি তানিনথারি অঞ্চল এবং চিন, শান ও কায়াহ রাজ্যে অভ্যুত্থানবিরোধীদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে জান্তা বাহিনী।
গত বৃহস্পতিবার পেকন শহরের পশ্চিমে পিডিএফ, শান রাজ্যের পেকন ও মোবি থেকে যাওয়া কারেনি যোদ্ধা এবং কায়াহ রাজ্যের লোইকাও ও ডেমোসো থেকে যাওয়া কারেনি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টির সশস্ত্র শাখা কারেনি আর্মির সম্মিলিত শক্তির সঙ্গে শাসক বাহিনীর ভয়ঙ্কর লড়াই শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী এ লড়াইয়ে অন্তত ২০ সেনা এবং এক বেসামরিক প্রতিরোধযোদ্ধা নিহত হন।
পিডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শাসক বাহিনী প্রচুর গোলা নিক্ষেপ করেছে এবং নিকটবর্তী একটি গ্রামে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
তাদের দাবি, জান্তা বাহিনী ধানের জমিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সহিংসতার ভয়ে পেকন ছেড়ে পালিয়েছেন বহু মানুষ। গত সোমবার জান্তা বাহিনীর গোলা নিক্ষেপের পর থেকে শহরটির অন্তত ১৫ হাজার বাসিন্দা ঘর ছেড়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
ইরাবতির খবর অনুসারে, বৃহস্পতিবার সকালে চিন ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ) চিন রাজ্যের কানপেটলেট শহরে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে একটি সামরিক কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে পাঁচ সেনা নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন। হামলার পর শাসক বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় বলে দাবি করেছে সিডিএফ।
এর আগে, গত বুধবার মিন্দাত-মাটুপি হাইওয়েতে ৭৫টি গাড়ির সামরিক কনভয়ে অতর্কিত আক্রমণ চালায় সিডিএফ। এতে অন্তত ১০ সেনা নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তবে মারা গেছেন ৭৩ বছর বয়সী এক প্রতিরোধযোদ্ধা।
সেদিন সকালে পিডিএফ এবং চিন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের সম্মিলিত বাহিনী সাগাইং অঞ্চলের কালে শহরে শাসক বাহিনীর ওপর আক্রমণ করে। এতে ৪৭ সেনা এবং এক প্রতিরোধযোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পিডিএফ। এ দুদিনে দেশটির আরও কয়েকটি অঞ্চলে জান্তা বাহিনী ও প্রতিরোধযোদ্ধাদের লড়াইয়ে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
নদী বন্দর / এমকে