ভর্তি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৮ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এক তলবি নোটিশে অধ্যক্ষ শাহান আরাকে আগামী ১৫ নভেম্বর উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নোটিশে বলা হয়, ড. শাহান আরা বেগম যদি নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হন, তবে অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে তার কোনো ‘বক্তব্য নেই’ মর্মে গণ্য হবে।
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ ড. শাহান আরার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়। যার অধিকাংশ নথিপত্র দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ থাকাকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
২০১৯ সালে মতিঝিল শাখায় এসএসসি ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণেরও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া টেস্ট পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে পারেননি, তাদের কাছ থেকে প্রতিটি বিষয়ের জন্য ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করে ফরম পূরণের সুযোগ দেন এ অধ্যক্ষ।
একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল শাখা, বনশ্রী ও মুগদা শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
২০১৯ সালের মে মাসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র ঘষামাজা করে নম্বর দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড।
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘বিশেষ ক্লাসের’ নামে বাধ্যতামূলক অর্থ আদায়ের অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় অভিযান চালায় দুদকের একটি দল।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার ও উপ-সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত দল অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। ওই সময় অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত জব্দ করে দুদক।
এ বছরের ২৯ আগস্ট দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। যদিও অভিযুক্তের দাবি, তার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।
নদী বন্দর / বিএফ