২০০১ সাল থেকে ২০২১ সালের এই পর্যন্ত দেশব্যাপী সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপ, মন্দির, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের মূলহোতাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক হামলা ও নৃশংসতা বন্ধের লক্ষ্যে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত সনাতন পরিষদের যুগ্মসচিব এম কে রায় এসব দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। অথচ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রায়ই দেশের কোথাও না কোথাও কোনো না কোনোভাবে হিন্দু সম্প্রদায় নির্মম নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা কোনো বিচার বা উপযুক্ত কোনো প্রতিকার পায়নি। দেখেশুনে মনে হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বাংলাদেশ পরিণত হতে চলেছে। যে মাইকে আজানের পবিত্র ধ্বনি ভেসে আসে, সেই মাইক দিয়ে অন্যায়কারীরা মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে এবং মাঠে-ময়দানে কোনো কোনো ব্যক্তি জঘন্য সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে হিন্দুদের বাড়িঘর মঠ-মন্দির জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এর মধ্যদিয়ে পবিত্র ইসলাম ধর্মের অবমাননা করলেন ধর্মের নামে অপপ্রচারকারীরা। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরাধীদের যেখানে কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ প্রদান করেছেন, সেখানে আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের জন্য তার পদত্যাগ দাবি করছি।
এম কে রায় দাবি তুলে ধরে বলেন, সাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন ও সাম্প্রদায়িক হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত মঠ-মন্দির, দেবালয় ও বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ প্রদান করতে হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও অবিলম্বে তা বলবৎ করে বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
সনাতন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।