বৃহস্পতিবার। সকাল আনুমানিক পৌনে ৭টা। এসময় রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জগিংয়ে ব্যস্ত মধ্যবয়সী কয়েকজন। তখন সেখানে উপস্থিত হলেন এক ব্যক্তি।
তিনি সবাইকে কাছে ডেকে নেন। তাকে বলতে শোনা যায়, তার সঙ্গে সামান্য পথ হেঁটে গেলে এ উদ্যানের চৌহদ্দিতেই নয়নাভিরাম একটি দৃশ্য দেখাবেন।
এ কথা শুনে বেশীরভাগ মানুষই পাল্টা তাকে বলেন, ‘ফাজলামি না করে ব্যায়াম শেষ করেন।’
কিন্তু ওই ব্যক্তি ফের একই কথা বললে সবাই তার সঙ্গে রওনা হন। বাংলা একাডেমির বিপরীত দিকের গেট থেকে সোজা নাক বরাবর রমনা কালি মন্দিরে প্রবেশ করতে দেখে সবাই বলে ওঠেন, ‘কালি মন্দির তো আমরা চিনি, এখানে আবার কী আছে?’
কিন্তু মন্দিরের প্রধান ফটক থেকে কয়েক পা এগিয়ে দক্ষিণের পুকুরের দিকে সবাইকে তাকানোর অনুরোধ জানান সেই ব্যক্তি।
পুকুরের দিকে তাকানোর সঙ্গে সঙ্গে সবার চোখ ছানাবড়া। গোটা পুকুরজুড়ে ফুটে আছে অসংখ্য লাল শাপলা। আর গোলাকার থালা আকৃতির সবুজ পাতায় পুকুরের পানির অধিকাংশ ঢেকে আছে।
এ যেন প্রকৃতির বুকে আঁকা এক নকশিকাঁথা। দৃষ্টিনন্দন এমন দৃশ্য দেখে কেউ বলেছেন, ‘ওয়াও’। কেউ আবার বলেছেন ‘অসাম’। কেউবা মোবাইল বের করে সেলফি ও গ্রুপ ছবি তোলায় ব্যস্ত।
শাপলা দেখা নিয়ে এত আগ্রহের পেছনে রয়েছে- যান্ত্রিক নগরী ঢাকা। এ নগরীতে জীবন-জীবিকার তাগিদে ব্যস্ত থাকে মানুষ। ঢাকা বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ইট-পাথরে দালানকোঠা, রাস্তাঘাট-যানজট ও পরিবেশ দূষণের দৃশ্য। তাই খোদ রাজধানীতেই নয়নাভিরাম শাপলা পুকুর রয়েছে তা দেখেই অবাক মানুষ।
রাজধানীর পুরান ঢাকার বাসিন্দা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রমনা কালি মন্দিরের এ পুকুরে এমন শাপলা রয়েছে তা জানতামই না। তিনি শুক্রবার মেয়েদের শাপলা দেখাতে নিয়ে আসবেন বলে জানান।
রমনা কালি মন্দিরের একজন জানান, গত দুই আড়াই মাস যাবত পুকুরটিতে শাপলা ফুটছে। শাপলা ফুল যেন কেউ নষ্ট না করে সেদিকে সব সময় খেয়াল রাখেন।
নদী বন্দর / সিএফ