নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে একটি ব্রিজের অভাবে তমরদ্দি ইউনিয়নের জোড়খালী ও কোরালিয়া গ্রামের দশ হাজার মানুষ ৫০ বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
ওই এলাকার পশ্চিমাংশে মেঘনা নদী, দক্ষিণ পাশে কাঁচা রাস্তা ও পূর্বপাশে চলাচলের অনুপযোগী বেড়িবাঁধ রয়েছে। ফলে উত্তর পাশে থাকা একমাত্র সাঁকো দিয়ে পারাপার ছাড়া কোনো উপায় নেই ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের।
স্থানীয়রা জানান, জোড়খালী ও কোরালিয়া গ্রামের অধিকাংশই কাঁচা রাস্তা। বর্ষায় চলাফেরা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া সাঁকো পেরিয়ে পাকা রাস্তা হয়ে উপজেলা সদর ও অন্যান্য জায়গায় যাতায়াত করতে হয়। ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় বাজার তমরদ্দি হওয়ায় বিভিন্ন কারণে লোকজনকে সাঁকো পার হয়ে যেতে হয়। তাছাড়া এই দুই গ্রামে কোনো উচ্চ বিদ্যালয় নেই। তাই শিক্ষার্থীদের সাঁকো পার হয়েই তমরদ্দি বাজারের স্কুলে যেতে হয়।
জানা গেছে, স্বাধীনতার আগে বা পরে কোনো একসময় কাটাখালী খালের ওপর নির্মিত হয় এই সাঁকো। বংশানুক্রমে একটি পরিবার এই সাঁকোর দেখভাল করে আসছে। বংশ পরম্পরায় এখন এটি জোড়খালী গ্রামের কামাল উদ্দিন (৫০) দেখাশোনা করে আসছেন।
স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী মো. নুরনবী জানান, এই সাঁকো পার হয়েই উপজেলা সদর ও ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় বাজার তমরদ্দি যেতে হয়। কিন্তু এটি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই সাঁকো পারাপারের সময় দুর্ঘটনা ঘটে। গত সপ্তাহেও সাঁকো পার হতে গিয়ে খালে পড়ে এক স্কুলছাত্রী আহত হয়েছে।
এছাড়া চিনির বস্তাসহ খালে পড়ে রিয়াজ উদ্দিন (৩৫) নামে একজনের কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। দুই মাস পেরোলেও এখনো তিনি উঠে দাঁড়াতে পারেননি বলে জানান ওই দোকানি।
তমরদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ উদ্দিন বলেন, এই সাঁকো দিয়ে আমি ছোটবেলায়ও পার হয়েছি। এটির বয়স প্রায় ৫০ বছর। সম্প্রতি সাঁকোর স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে একাধিকবার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার হয়নি।
হাতিয়া উপজেলা প্রকৌশলী তপন চন্দ্র দেব নাথ বলেন, কাটাখালী খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন হলে প্রাক্কলন ব্যয় তৈরি করে দরপত্র আহ্বান করা হবে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই ব্রিজটি হয়ে যাবে।
নদী বন্দর / পিকে