সুন্দর করে সাজানো সিলভার কার্প, কাতল, চিতল, রুই, ব্লাডকার্প, ব্রিগেড, বাঘাইড়, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। সারি সারি দোকান। সেখানে থরে থরে সাজানো মাছ, চলছে হাঁকডাক, দরদাম।
এক কেজি থেকে শুরু করে ২৫ কেজি ওজনের মাছ আছে। লোকজনও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন এসব মাছ। আবার দেখতে এসেছেন অনেকেই।
জানা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উৎসবের পঞ্জিকা অনুসারে বৃহস্পতিবার অগ্রহায়ণের এইদিনে নবান্ন উৎসব পালন করেন। প্রতিবছর এ উৎসবকে ঘিরে বগুড়ার শিবগঞ্জের ওমরপুর, রণবাঘায় মাছের মেলা বসে। এছাড়া উপজেলার নাগরকান্দি, হাটকড়ই, ধুন্দার ও নন্দীগ্রামে মাছের মেলা বসেছে।
মাছ মেলায় অনেক জেলে, মাছ খামারি, মাছ ব্যবসায়ী তাদের মাছ নিয়ে এনেছেন। উপজেলাজুড়ে প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়।
১৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে ব্রিগেড ও সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে। রুই ও কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। চিতল ও ব্ল্যাডকার্প মাছ ওজনভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ১২ কেজি ওজনের গজাইড় মাছ ১৫০০ টাকা কেজি দরে দাম চাওয়া হচ্ছে।
এদিকে মেলায় শীতকালীন হরেক রকমের সবজি উঠেছে। প্রতিবারের মতো এবারও ক্রেতা সমাগম চোখে পড়ার মতো হলেও মাছের দাম অনেকটা স্বাভাবিক বলে জানান ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
কালিকাপুর গ্রামের ধীরেন চন্দ্র বলেন, যুগ যুগ ধরে অগ্রহায়ণ মাসের এইদিন মাছের মেলা বসে। দিন যতই যাচ্ছে এই মেলার ঐতিহ্য ততই বাড়ছে।
মাছ বিক্রেতা মিলন হোসেন বলেন, মেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় শতাধিক মাছের দোকান বসেছে। প্রত্যেক বিক্রেতা অন্তত ১০ থেকে ২০ মণ করে মাছ বিক্রি করেছেন।
গুন্দইল গ্রামের অপর মাছ বিক্রেতা মোস্তফা আলী বলেন, নবান্ন উৎসবকে ঘিরেই তারা মূলত বড় বড় মাছ মেলায় বিক্রি করতে আনেন। তারা ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা চিন্তা করেই মাছের দাম কম রাখেন।
উপজেলার কাথম গ্রাম থেকে অতিথি আপ্যায়নের জন্য মাছ কিনতে এসেছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে এখানে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে মেলা বসে। দিনব্যাপী এই মেলায় নিত্যনতুন জিনিস পাওয়া যায়। প্রধান আকর্ষণ মাছ। পুকুরের বড় বড় মাছ মেলায় বিক্রি করতে আনেন। এ মেলায় মাছের পাশাপাশি সকল পণ্য পাওয়া যায়।
নদী বন্দর / পিকে