1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
পদ্মার মাছের ওজন-দাম: যত কয় তত নয় - Nadibandar.com
মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৭৮ বার পঠিত

পদ্মা বিধৌত জেলা রাজবাড়ী। এ জেলার অভ্যন্তরের ৮৫ কিলোমিটার অংশে রয়েছে প্রমত্তা পদ্মা নদী। পাশাপাশি রয়েছে গড়াই, হড়াই, চত্রাসহ বিভিন্ন নদী ও খাল-বিল। ফলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে হাজার হাজার মানুষ। পদ্মার মাছ সুস্বাদু হওয়ায় দেশজুড়ে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ার পদ্মায় ধরা পড়া মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেই সঙ্গে মাছের সংবাদের চাহিদা রয়েছে গণমাধ্যমজুড়ে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দৌলতদিয়ার একটি চক্র মিডিয়ায় ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পদ্মায় প্রায় প্রতিনিয়তই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বড় বড় রুই, কাতল, বাগাইড়, ঢাই, বোয়াল, পাঙ্গাশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। জেলেরা মাছগুলো দৌলতদিয়ার মৎস্য আড়ত ও ঘাটের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। ওই সময় ঘাটের কয়েক ব্যবসায়ী নিজেরাই মাছের ছবি তুলে ফেসবুকসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠিয়ে দেন। পরে সাংবাদিকরা তথ্য চাইলে দেয়া হয় মনগড়া তথ্য।

যেমন- মাছের ওজন ১০ কেজি কিন্তু বলা হয় তারও বেশি। এমনকি যে টাকা দিয়ে কিনেছে বলা হয় তার চেয়েও অনেক বেশি। এ সময় মাছগুলো ফেরি ঘাটের পন্টুনের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে দেশের বড় বড় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের কাছে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিক্রি করেন। এছাড়া অন্য নদী, পুকুর অথবা বিলের মাছ এনে পদ্মার মাছ বলেও বিক্রির অভিযোগ রয়েছে ওই চক্রটির বিরুদ্ধে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেরিঘাট এলাকার কয়েক ব্যক্তি বলেন, দৌলতদিয়া এলাকার পদ্মায় বড় বড় মাছ মাঝে মধ্যেই ধরা পড়ে। কিন্তু টিভি ও পত্রপত্রিকায় প্রায় প্রতিনিয়তই বড় বড় মাছের সংবাদ প্রকাশ হয়। আসলে মাছগুলো কি পদ্মার নাকি অন্য স্থানের? এখন চাষের মাছও কিন্তু ১০-১৫ কেজি ওজনের হয়।

তারা আরও জানান, মাছের ওজন ১২ কেজি, কিন্তু মিডিয়ায় দেখেন ১৬ কেজি এবং দাম বলা হয়েছে ১৪শ টাকা কেজি অথচ সেই মাছ কেনা হয়েছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে। এভাবে মাছের দাম বাড়িয়ে তারা বেশি দামে বিক্রি করেন। বড় বড় মাছ শিল্পপতি ও বড় ব্যবসায়ীরা কিনে নেন।

মো. শওকত, নিত্য হলদার, আসলাম, মাজেদ মণ্ডলসহ কয়েকজন জেলে বলেন, নদীতে তারা বড় বড় মাছ ধরতে নামেন। পাঙ্গাশ, কাতল, বাগাইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ তাদের জালে ধরা পড়ে। কিন্তু প্রতিদিন ধরা পড়ে না। হঠাৎ হঠাৎ ধরা পড়ে। সেই মাছ দৌলতদিয়ার আড়ত ও ঘাট এলাকায় বিক্রি করেন। এখন নদীতে মাছ খুব কম। যে কারণে তারা নদীর পাড়ে জাল মেরামত করে সময় পার করছেন।

 

মাছ ছোট থাকতেই জাল, বড়শি, চায়না দোয়ারীসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মেরে ফেলায় নদীতে মাছ কমে আসছে। আড়তদারদের থেকে লাখ লাখ টাকা দাদন নিয়ে জাল দড়ি বানিয়েছেন। কিন্তু মাছ না পাওয়ায় সেই টাকা শোধ করতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মাছ ব্যবসায়ী সাঈদুল ইসলাম মোল্লা বলেন, মাছ ছোট বড় সবই ধরা পড়ে। কিন্তু সব দিন যে বড় মাছ আসবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। চাহিদা বাড়াতে মিডিয়ায় ওজন বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। কিন্তু মাছটি যিনি কিনছেন, তিনি কিন্তু ওজন করেই নিচ্ছেন। আসলে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ওজন বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। এটা একান্তই ব্যক্তিগত। এতে অন্যের কোনো স্বার্থ নেই।

আড়তদার আনোয়ার হোসেন খান বলেন, তারা জেলেদের টাকা দেয়াসহ জাল বানিয়ে দেন। জেলেরা মাছ ধরে আড়তে বিক্রি করেন। এ সময় শতকরা ৫ টাকা কমিশন রেখে জেলেদের টাকা দেন। আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত বড় মাছ ধরা পড়ে। পুকুরের মাছ নদীর মাছ বলে বিক্রি করা হয় কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য অফিসার মশিউর রহমান বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ইলিশ রক্ষা ও জাটকা ধরা বন্ধের সময় নদীতে মাছ ধরা নিষেধ থাকে। এসব কারণে নদীতে বড় মাছ পাওয়া যায়। এ ধারা অব্যাহত থাকায় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি ফিরে আসবে। পদ্মায় দুটি অভয়াশ্রম তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া পদ্মায় আরও অভয়াশ্রম সৃষ্টির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।

নদী বন্দর / সিএফ

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com