খালেদা জিয়াকে হত্যাচেষ্টার মাধ্যমে দেশে অস্তিত্ব বিলুপ্তির ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আর বাংলাদেশের গণতন্ত্র একাকার। খালেদা জিয়া এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এক। তাকে বন্দি করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বন্দি করা হয়েছে। তাকে বন্দি করে গণতন্ত্রকে বন্দি করা হয়েছে।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এ সমাবেশের আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগের পাঠানো হয়েছে সম্পূর্ণ একটা মিথ্যা মামলায়। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে তাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। যেখানে লোয়ার কোর্ট থেকে দেওয়া হয়েছিল পাঁচ বছর। হাইকোর্টে দেওয়া হয়েছে ১০ বছর। এতেই বোঝা যায় কীভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। কীভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করছে। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই রাষ্ট্রকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সেই কারণে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের কথা মুখে বলে, বিশ্বাস করে না। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর তারা একই কাজ করেছে। গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে বাকশাল গঠন করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপি নেত্রী বলে আমরা বলছি না, বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য, আপসহীন ভূমিকার জন্য দেশের মানুষ তার মুক্তি চায়।
ফখরুল বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা ক্ষমতায় আছে তারা বড় মানুষদের কথা চিন্তা করে। যাদের মিল-কারখানা আছে, তাদের প্রণোদনা দেয়। কিন্তু যারা মিল-কারখানা চালু রেখেছেন, গাড়ির চাকা চালু রেখেছেন তাদের কোনো প্রণোদনা দেয়নি। সরকার উন্নয়নের কথা বলে, এই উন্নয়ন কাদের হচ্ছে? সাধারণ মানুষের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। সেজন্য দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে, সেজন্য বলছি না, এই সরকারকে সরাতে হবে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের মন্ত্রীরা যে ভাষায় কথা বলেন কোনো সুস্থ-সভ্য মানুষ এ ভাষায় কথা বলতে পারে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি বিএনপির ভুল ছাড়া আর কিছুই দেখতে পান না। সারাক্ষণ শুধু দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকেন। শুধু বিএনপি-বিএনপি-বিএনপি। আপনারা বলে থাকেন, বিএনপি নাকি নাই, বিএনপি যদি নাই থাকে তাহলে বিএনপিকে নিয়ে এত দুঃস্বপ্ন দেখেন কেন?
শিক্ষার্থীদের সড়ক আন্দোলন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এত লোক কোথা থেকে আসলো’। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সামনে কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় নামবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের কথা বলেন। নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশন যেটা আছে সেটাকে সরিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
নদী বন্দর / পিকে