সমুদ্র দেখতে ইচ্ছে হলেই কোনোদিক চিন্তা না করে সবাই ছুটেন কক্সবাজারে। দেশের প্রধান পর্যটন গন্তব্য হলো কক্সবাজার। প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। পাহাড়, সমুদ্র, ঝরনাসহ প্রাকৃতিক মনোরোম সৌন্দর্য উপভোগ করতেই পর্যটকরা ছুটেন কক্সবাজার পানে।
বর্তমানে সেখানে ৫ তারকা বিভিন্ন হোটেলসহ উড়ন্ত রেস্টুরেন্ট চালু হয়েছে। চাহিদা বাড়ার কারণে কক্সবাজারে খরচও দিন দিন বাড়ছে। তাই অনেক নিন্মআয় ও মধ্যবিত্তরা খরচের ভয়ে কক্সবাজার ভ্রমণে যেতে পারেন না। তবে চাইলেই কয়েকটি উপায়ে খরচ কমিয়ে অল্পের মধ্যেই ঘুরে আসতে পারেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে-
>> সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে ঘুরতে যাবেন না। এমন দিনগুলোতে কক্সবাজারে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যায়। যেমন- ঈদের সময়, সরকারি ছুটি, ডিসেম্বর মাস এড়িয়ে চলুন ভ্রমণের ক্ষেত্রে। এ সময় সব কিছু দাম বেড়ে যায়।
>> বাজেট ট্রিপে যতটা সম্ভব ব্যাগ বা লাগেজ কম রাখুন। এসব সঙ্গে থাকলে চলাফেরায় সমস্যা হয়। ফলে বিভিন্ন সময় রিক্সা বা অটো ব্যবহার করতে হয়। এজন্য কম খরচে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কোথাও গেলে সঙ্গে রাখুন একটি ব্যাগপ্যাক। যেটি পিঠে ঝুলিয়ে হাঁটতেও পারবেন আবার প্রয়োজনে দৌড়াতেও পারবেন।
>> চেষ্টা করুন রাতে গাড়িতে আসা-যাওয়া করার। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই সরাসরি কক্সবাজারের বাস পাবেন। শীতকাল হওয়ায় ননএসি বাসে ৭০০-৮০০ টাকা ভাড়াতেই চলে যেতে পারেন ঢাকা থেকে কক্সবাজারে। যাওয়া আসা দুই রাত বাসে থাকলে আপনার দু’দিনের থাকার খরচ কমে যাবে।
>> নিজেই হোটেল খুঁজে বের করুন। অনেক সময় বাস থেকে নামার পর সিএনজি বা রিক্সাওয়ালা বিভিন্ন হোটেলের সামনে নিয়ে যেতে পারে। ভুলেও তাদের দেখানো হোটেলে থাকবেন না। এরা সাধারণত বড় অংকের কমিশনের বিনিময়ে হোটেল ঠিক করে দেয়। তাই এদের কথা না শুনে প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে হোটেল খুঁজে বের করুন।
গলির মধ্যে হোটেলের সন্ধান করুন। কক্সবাজারে বিচের যত কাছে থাকবেন ততই ভাড়া বাড়বে। যেহেতু আপনি বিচেই ঘুরবেন, তাই বেশি ভাড়া দিয়ে সমুদ্রের পাশে থাকার প্রয়োজন নেই। কলাতলী রোডে একটু গলির মধ্যে খোঁজাখুজি করলে ৫০০ টাকার মধ্যেও মোটামুটি ভালো হোটেল পাবেন।
>> ইজি বাইক ও অটো ব্যবহার করুন। ইনানি বা হিমছড়ি যেতে চাইলে কলাতলী মোড় থেকে লোকাল ইজি বাইক/অটোতে বসুন। হিমছড়ি পর্যন্ত মাত্র ২০ টাকা ভাড়ায় চলে যেতে পারবেন। ৫০ টাকা খরচ করে যাওয়া যায় ইনানি বিচ পর্যন্তুও।
আর যদি সংখ্যায় বেশি হোন চাইলে হিমছড়ির জন্য ২০০ টাকাতেও অটো রিজার্ভ করে নিতে পারবেন। একইভাবে মহেশখালি যেতে চাইলে লঞ্চঘাট থেকে শেয়ারে স্পিড বোটে উঠে পরুন। তারপর আদিনাথ মন্দির ঘুরে দেখে আবার চল আসুন কক্সবাজার।
>> সঠিক সময়ে চেক আউট করুন। হোটেলের চেক ইন সাধারণত দুপুর একটা আর চেক আউট সকাল ১১টার দিকে হয়। তাই আগেই হোটেলে জানিয়ে রাখুন সন্ধ্যা পর্যন্ত আপনি কী হোটেলের রুমে থাকতে পারবেন কি না।
তবে ভিড় থাকলে আপনাকে ১১টার পর আর সময় দেবে না। এমন ক্ষেত্রে রুম ছেড়ে সঙ্গে ব্যাগ বা লাগেজ থাকলে তা রেখে যেতে পারেন হোটেল কাউন্টারে। সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় হোটেলে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে চলে যেতে পারেন বাস কাউন্টারে।
>> কক্সবাজারে খাবারের জন্য অনেক খরচ হয়ে যায়। একসঙ্গে কয়েকজন গেলে অবশ্য খাওয়ার খরচসহ সব খরচই কমে আসে। যেমন- একটি লইট্টা মাছের ফ্রাই নিলে ৩ জন খাওয়া যায়। আবার ৮০ টাকা প্লেটের ভর্তা ভাজি নিলে ৪ জনে ভাগ করে আনায়সে খাওয়া যায়।
মূল খাবারের জন্য যে তরকারি নেবেন সেটিও ভাগ করে খাওয়া যায়। এরকম ভাগ করে খেতে পারলে আপনার খরচ মাথাপিছু প্রতি বেলা ১৫০ টাকায় নেমে আসবে। এ ছাড়াও শহরে গিয়ে খেলেও খাবারের খরচ অনেক কমে যাবে। শহরের লালদীঘির পাড়ে অনেক হোটেল আছে, সেখানে কম খরচে খেতে পারবেন।
যদিও কিছু আইটেমের দাম বেশি। সেগুলো তালিকা থেকে এগুলো বাদ দিন। যেমন- রূপচাঁদা মাছ অর্ডার করলেই ৩৫০ টাকা যোগ হয়েবে। একই কথা চিংড়ি মাছের জন্যও প্রযোজ্য।
ওশেন প্যারাডাইজ হোটেলের উল্টো দিকে গলির ভেতরে বেশ কয়েকটি ভালো খাবারের হোটেল আছে। সেখানে খেলে খরচ কিছুটা কমাতে পারবেন।
নদী বন্দর / জিকে