1. badsha.dru@gmail.com : admi2017 :
  2. nadibandar2020@gmail.com : Nadi Bandar : Nadi Bandar
সংকট কাটেনি, খাদ্যের সন্ধানে রাস্তায় কাবুলের শিশুরা - Nadibandar.com
বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন
নদী বন্দর ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৫০ বার পঠিত

কেউ জুতা সেলাই করছে, কেউবা ময়লা আবর্জনার স্তূপ থেকে ভালো কিছু খুঁজে বের করে বিক্রি করছে খোলা বাজারে। বলছি আফগান শিশুদের কথা। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান চরম আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে দেশটিতে। উপায় না পেয়ে কাজের সন্ধানে রাস্তায় নেমেছে কাবুলের অবুঝ শিশুরাও। পরিবারের মুখে একবেলা খাবার জোটাতে নিরন্তর চেষ্টা তাদের। বিবিসির প্রতিবেদনে আফগান শিশুদের কঠিন পরিস্থিতির চিত্র উঠে এসেছে।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলে নেয় তালেবান। এরপর ৩১ আগস্ট টানা ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত দেশটি থেকে সব সেনা প্রত্যাহার করে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা। এরপর রাজনৈতিক গোলযোগ ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেয় বহু আফগান পরিবার। কিন্তু যারা দেশ ছাড়তে পারেননি তারা পড়েছেন চরম বিপাকে।

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে দেশটিতে। নিরাপত্তার অভাব, সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে দেশটি। মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।

 

আফগানিস্তানের অর্থনীতি মূলত টিকে আছে বিদেশি সহায়তার ওপর। বিশ্বব্যাংক বলছে, সরকারি বিভিন্ন খাতের ৭৫ শতাংশ খরচই মেটে বিদেশি সহায়তা থেকে। তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের পর থেকে এসব সহায়তার বেশির ভাগই বন্ধ রয়েছে।

কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আফগানিস্তানের জমা থাকা রিজার্ভের অর্থ জব্দ করে রেখেছে মার্কিন সরকার। ফলে সেই অর্থে হাত দিতে পারছে না তালেবান। বেঁকে বসেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলও (আইএমএফ)। আফগানিস্তানে সংস্থাটির পক্ষ থেকে ৪৫ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। আর্থিক সহায়তা বন্ধ রেখেছে বিশ্বব্যাংকও। যদিও সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক সেই অর্থ ছাড়ার কথা জানিয়েছে।

এর আগে জাতিসংঘ জানায়, আফগানিস্তানের এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছে। সংস্থাটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, গত তিন বছরের মধ্যে আফগানিস্তানে দ্বিতীয়বারের মতো খরা দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাস সামাজিক ও অর্থনীতিকে পরিবেশকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে চরম বিধ্বস্ত দেশটি। এ অবস্থায় অন্যদের আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি।

এদিকে, তালেবান সরকার গঠনের পর একের পর এক বিধিনিষেধ জারি করছে। যার ফলে দেশটির সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।

১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান তালেবানের শাসনে ছিল। এর মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদার নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট সেখানে যৌথ অভিযান চালায়, যার মাধ্যমে তালেবান শাসনের অবসান ঘটে।

এরপর টানা ২০ বছর ধরে যুদ্ধ চলে তালেবান এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সঙ্গে। তালেবানের শাসনামলে নারীদের স্বাধীনতা খর্ব করা, প্রকাশ্যে বিচার ব্যবস্থার মতো নিয়ম কানুন মেনে নেয়নি আফগানিস্তানের মানুষ। সেকারণে তালেবানের পতনের পর আফগানরা ভেবেছিল সময় হয়তো বদলেছে। কিন্তু তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে স্বাভাবিক হতে পারেনি তাদের জীবনযাপন। যুদ্ধ চলাকালে প্রাণ গেছে বহু বেসামরিক আফগান নাগরিকের।

 

আবারও তালেবান ক্ষমতায় আসায় সেই ১৯৯৬ সালের শঙ্কা ভর করছে দেশটির সাধারণ মানুষের মনে। এরই মধ্যে তালেবান সরকার নারীদের ব্যাপারে নানা বিধিনিষেধ জারি করেছে। এর আগে তালেবান নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ও বন্ধ করে দেয়। শান্তিবিষয়ক ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় ভেঙে দেওয়া হয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশনও। ফলে একদিকে যেমন রাজনৈতিক অস্থিরতা অন্যদিকে অর্থনীতির চরম বিপর্যয়। আর এসবের প্রভাব পড়ছে আফগানিস্তানের খেটে খাওয়া মানুষের ওপর।

আফগানিস্তানের বেশিরভাগ পরিবারের মানুষ কর্মহীন। বাড়ির বাইরে বের হলেই নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তাদের। মিলে না উপার্জনের পথ। তাই পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটাতে রাস্তায় নামছে শিশুরাও। তারপরও পড়াশোনা করে জীবনে ভালো কিছু করার স্বপ্ন তাদের চোখে মুখে। উপার্জন করার কাজ কঠিন হলেও পরিবারের সদস্যদের জন্য কিছু করতে পেরে আনন্দ পায় এই ছোট্ট শিশুরাও।

 

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার দেশটির সাধারণ মানুষের ওপর যতটা কড়াকড়ি নিয়ম জারি করবে ততই তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। বিদেশি সতায়তা পাওয়ার বিষয়টি নিয়েও থেকে যাচ্ছে সংশয়, এমন ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ফলে অর্থের অভাবে আফগানিস্তানের শিশুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকেই যাচ্ছে।

নদী বন্দর / জিকে

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2020 Nadibandar.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com