সরকারের টানা একযুগ ক্ষমতাকালে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়াকে সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করতে না পারাকে বড় ব্যর্থতা বলে মনে করছেন তিনি।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সচিত্র বঙ্গবন্ধু’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন ও বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের একযুগ পূর্তিতে বড় সাফল্য এবং বড় ব্যর্থতা কী, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘একযুগ পূর্তিতে সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে, দেশের যেমন উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে তেমনি প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। দারিদ্র্য কমেছে। বাংলাদেশে এখন ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ দেখা যায় না। বাংলাদেশ এখন খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। বাংলাদেশে এখন কবিতায় কুঁড়েঘর আছে, আকাশ থেকে সহজে কুঁড়েঘর দেখা যায় না। এই পরিবর্তন ১২ বছরে শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘১২ বছর আগে আমরা বলতাম, ক্ষুধা এবং দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব। আমরা ক্ষুধাকে ইতোমধ্যেই জয় করতে সক্ষম হয়েছি। এখন ‘আমাকে একটু বাসি ভাত দেন,’ সন্ধ্যার পরে শহরের অলি-গলিতে কিংবা ভরদুপুরে গ্রাম-গ্রামান্তরে সেই ডাক শোনা যায় না। বাসি ভাতের সমস্যা বা অন্যান্য সমস্যার সমাধান জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ১২ বছরে করতে সক্ষম হয়েছেন।’
বাংলাদেশ খাদ্যে ‘প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর মুনাফালোভীরা যাতে প্রাইস হাই করতে না পারে সেজন্য চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। চাল উৎপাদনে ঘাটতির জন্য নয়, মুনাফালোভীরা যাতে জনগণকে জিম্মি করতে না পারে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
ড. হাছান বলেন, ‘আরও বড় অর্জন হচ্ছে বাংলাদেশ ছিল স্বল্পোন্নত দেশ। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। আমাদের ব্যর্থতা হচ্ছে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও একটি বড় রাজনৈতিক দল যারা স্বাধীনতা চায়নি তাদেরকে নিয়ে রাজনীতি করে। এই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশ থেকে নির্মূল হয়নি। এটি আমাদের ব্যর্থতা।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বিএনপিসহ তার মিত্ররা দেখতে পায় না। একইসঙ্গে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গ যারা অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করে, মাঝেমধ্যে রিপোর্ট পেশ করেন তারাও এ উন্নয়ন অগ্রগতি দেখেন না। আমি আশা করব সরকার দায়িত্বে যেহেতু আছে সমালোচনা হবে, সমালোচনা থাকবে, থাকতে হবে। কিন্তু সেটা যেন অন্ধের মতো, বধিরের মতো না হয়। যে অগ্রগতি হয়েছে সেটির প্রশংসা থাকতে হবে। একইসঙ্গে গঠনমূলক সমালোচনা থাকতে হবে, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।’
এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং সরকার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের (ডিএফপি) মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়াও বক্তব্য রাখেন।
নদী বন্দর / এমকে